খালেদা জিয়া পদ্মা সেতুতে ওঠেন কি না খেয়াল করব : কাদের
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তাঁর দলের নেতাকর্মী পদ্মা সেতুতে উঠবেন কি না, তা খেয়াল করা হবে।
আজ বুধবার দুপুরে খাগড়াছড়ির রামগড়ে নির্মিতব্য বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ নিয়ে দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গতকাল ঢাকায় ছাত্রদলের এক অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া বলেন, ‘পদ্মা সেতুর স্বপ্ন দেখাচ্ছে সরকার। কিন্তু পদ্মা সেতু আওয়ামী লীগের আমলে হবে না। এ সেতু জোড়াতালি দিয়ে বানানো হচ্ছে। এ সেতুতে কেউ উঠবেন না।’
এরই পরিপ্রেক্ষিতে কাদের বলেন, ‘পদ্মা সেতু দৃশ্যমান বাস্তবতা। এটা দেখে বিএনপি নেত্রীর গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে। তিনি নিজে পারেননি, শেখ হাসিনা পারছেন। এটাই তাঁর অন্তরের জ্বালা। এটাই তিনি সইতে পারছেন না। এটাই হলো বাস্তবতা, আর কিছু না। ইনশাল্লাহ পদ্মা সেতু যথাসময়ে শেষ হবে। আমরা পদ্মা সেতু হলে আমরা একটু খেয়াল করব, কেউ নাকি উঠবে না, বিএনপি নেত্রী, তাঁর দলের লোকেরা ওই সেতুর ওপর দিয়ে যায় কি না।’
নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের কথা ছিল বিশ্বব্যাংকের। কিন্তু দুর্নীতির সম্ভাব্য ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এ থেকে সরে যায় সংস্থাটি। পরে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারের নিজস্ব অর্থায়নের নির্মাণকাজ শুরু হয়।
২০১৪ সালে চীনের রেল মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ার কোম্পানির সঙ্গে বহুল পদ্মা সেতু নির্মাণের চুক্তি সই করে বাংলাদেশ সরকার। ২০১৮ সালের নভেম্বরের মধ্যে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুর অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। একই বছরের ২২ মে পদ্মা বহুমুখী সেতুর মূল কাঠামো নির্মাণ করতে চীনা এই প্রতিষ্ঠানের দরপ্রস্তাব অনুমোদন দেয় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এরপর ২ জুন সেতুর মূল কাঠামো নির্মাণে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডকে কার্যাদেশ দেয় সরকার।
পদ্মা সেতু নির্মাণে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র কিনেছিল তবে এদের মধ্যে দরপ্রস্তাব জমা দিয়েছিল শুধু চীনা এই কোম্পানিটি। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে দুইতলা বিশিষ্ট এই সেতুটি নির্মাণ করা হবে। এর ওপরে থাকবে সড়ক পথ আর নিচের অংশ দিয়ে চলাচল করবে রেল।
এরপর ২০১৪ সালের ১০ নভেম্বের পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদী শাসনের জন্য চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি সই করা হয়। বছরের শেষ নাগাদ মাওয়া ও জাজিরা পয়েন্টের সংযোগ সড়কের কিছু কাজ, ভূমি অধিগ্রহণ এবং প্রকল্প এলাকার উন্নয়নসহ ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য প্লট বরাদ্দ ইত্যাদি কাজ শেষ হয়। এরই মধ্যে প্রকল্পের অর্ধেকের বেশি কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার।
মুন্সীগেঞ্জর মাওয়া পয়েন্টে এই সেতু নির্মাণ হলে দেশের মোট ২১টি জেলার সঙ্গে ঢাকার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ তৈরি হবে।