বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান বর্জন, ইউএনওর অপসারণ দাবি
যশোরের কেশবপুরে বিজয় দিবসের প্যারেড গ্রাউন্ডে পতাকা উত্তোলন ও সালাম গ্রহণ করতে না পারায় অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান। এ ছাড়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আসনবিন্যাসের কারণে অনুষ্ঠান বর্জন করেন মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশ।
বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। সংবাদ সম্মেলনে ওই দুই ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করা হয়। উল্লেখ্য, উপজেলা চেয়ারম্যান এইচ এম আমির হোসেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তিনি নিজেও ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
আজ শনিবার উপজেলার পাবলিক ময়দানে ওই প্যারেড অনুষ্ঠান ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা চেয়ারম্যানের পাশাপাশি ওই অনুষ্ঠান বর্জন করেন লাল মুক্তিবার্তা তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধারা।
উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম রুহুল আমিন। এ সময় বিভিন্ন পরিস্থিতির বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন উপজেলা চেয়ারম্যান এইচ এম আমির হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ আলী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী গোলাম মোস্তফা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী প্যারেড গ্রাউন্ডে পতাকা উত্তোলন ও সালাম গ্রহণ করবেন উপজেলা চেয়ারম্যান। কিন্তু কেশবপুরে সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক, ইউএনও এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পতাকা উত্তোলন ও সালাম গ্রহণ করেন। এ কারণে উপজেলা চেয়ারম্যান অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।
এ ছাড়া বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আগের রীতি অনুযায়ী মুক্তিবার্তা ও ভারতীয় তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের বসার ব্যবস্থা করতে ইউএনও অপরাগতা প্রকাশ করায় ওই মুক্তিযোদ্ধারা প্রশাসনের সব অনুষ্ঠান বর্জন করেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দলীয় কার্যালয় চত্বরে শনিবার ওই মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনার জন্য নির্মিত ডায়াস শুক্রবার গভীর রাতে ষড়যন্ত্রকারীরা ভাঙচুর ও ছাউনির পর্দা ছিঁড়ে ফেলেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়েছে। এ ছাড়া ইউএনওর তত্ত্বাবধানে বিজয় দিবস পালনের জন্য উপজেলার প্রায় পাঁচ হাজার মৎস্য ঘেরমালিক, ইটের ভাটা ও ক্লিনিক থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ওই সব ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ইউএনও মিজানুর রহমানের অপসারণের দাবি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ইউএনও মিজানুর রহমান বলেন, ‘অতীতে পতাকা উত্তোলন ও সালাম গ্রহণ করতেন উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যানদের দাবির প্রেক্ষিতে গত বছর থেকে সরকার ইউএনওদের পাশাপাশি উপজেলা চেয়ারম্যানদের পতাকা উত্তোলন ও সালাম গ্রহণের নিয়ম করেছে। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য অথবা মন্ত্রী ইচ্ছা পোষণ করলে তিনিও পতাকা উত্তোলন ও সালাম গ্রহণ করতে পারবেন।’
ইউএনও মিজানুর রহমান আরো বলেন, ‘বিজয় দিবসে গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু ওই অনুষ্ঠানে একটি গ্রুপ অংশ নেয়নি।’ বিজয় দিবসের প্রস্তুতিমূলক সভায় মৎস্য ঘেরমালিক, ইটের ভাটা ও ক্লিনিক থেকে অর্থ সহযোগিতা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় বলে তিনি জানান।