এবার ঠিকাদারকে পেটালেন এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী
এবার রফিক আহমেদ নামের এক ঠিকাদারকে মারধর করলেন বান্দরবানের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমা। এ ঘটনায় স্থানীয় ঠিকাদারদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কাল বৃহস্পতিবার এলজিইডির মুখ্য প্রকৌশলী বরাবরে স্মারকলিপি দেবেন স্থানীয় ঠিকাদাররা।
এ ঘটনায় আজ বুধবার সন্ধ্যায় ঠিকাদাররা বান্দরবান শহরে মাইকিং করে। নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমা ঠিকাদারদের হত্যার হুমকি দিচ্ছেন বলে তারা অভিযোগ করে। এর প্রতিবাদে কাল তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করবে এবং স্মারকলিপি দেবে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ঠিকাদাররা জানায়, লামা উপজেলার বাসিন্দা ঠিকাদার রফিক আহমেদ গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মেসার্স আকতার ট্রেডার্সের লাইসেন্সের বই সংগ্রহ করতে জেলা এলজিইডির অফিস সহকারীর কক্ষে যান। হঠাৎ নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমা অফিস সহকারীর কম্পিউটার রুমে ঢুকে ঠিকাদার রফিক আহমেদকে ঘুষি ও চড়-থাপ্পর মারেন। প্রচণ্ড ব্যথায় ঠিকাদার মাটিতে পড়ে গেলে অফিসের কর্মচারী ও অন্যান্য ঠিকাদাররা এসে তাঁকে উদ্ধার করে।
এদিকে নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমার বিরুদ্ধে আগেও অফিসের কয়েকজন কর্মচারীকে মারধর, পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্বরত অবস্থায় পরিষদের ডরমেটরিতে পরিষদের একজন কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করা এবং সম্প্রতি ইংরেজি দৈনিকের একজন সাংবাদিকের সঙ্গেও খারাপ আচরণের অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিশ্চুক জেলা এলজিইডির কয়েকজন কর্মচারী জানায়, কোনো কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে মূলত অফিসের কর্মচারী ইয়াছিনকে মারধর করছিলেন নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমা। কিন্তু কৌশলে ইয়াছিন অন্যরুমে পালিয়ে যান। প্রকৌশলী রুম থেকে বের হয়ে ইয়াছিনকে খুঁজে না পেয়ে ঠিকাদার রফিকককে মারধর করেন। এর আগে এলজিইডির আলীকদম ও রোয়াংছড়ি উপজেলার দুজন কর্মচারীকেও এভাবে মারধর করেছেন মোহন চাকমা। কিন্তু অফিসের অধীনস্ত কর্মচারী হওয়ায় প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি। নির্বাহী প্রকৌশলীর আচরণে অতিষ্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও।
আহত ঠিকাদার রফিক আহমেদ বলেন, “মেসার্স আকতার ট্রেডার্সের লাইসেন্সের বই সংগ্রহ করতে মঙ্গলবার দুপুরে আমি এলজিইডির জেলা অফিসের কম্পিউটার রুমে গিয়েছিলাম। হঠাৎ ‘তুই এখানে কি?’ বলে নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমা পাগলের মতো আমাকে ঘুষি, চড়-থাপ্পর মেরেছেন। আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি।”
স্থানীয় ঠিকাদার মশিউর রহমান মিঠুন, সৌরভ দাশ শেখর ও আবুল খায়ের মিন্টু বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই একজন ঠিকাদারকে মারধর করেছেন নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমা। এটি শুধু দুঃখজনক ঘটনা নয়, তাঁদের জন্য অপমানজনক। সরকারি একজন কর্মকর্তার এতটা দাম্ভিকতা দেখানো উচিত নয়। নির্বাহী প্রকৌশলীর বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার ঠিকাদাররা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এলজিইডির মুখ্য প্রকৌশলী বরাবর স্মারকলিপি দেবেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমা বলেন, ‘কেন ঠিকাদারকে মারধর করব। আমি তো রফিক নামে কাউকে চিনিই না। আজগুবি সব খবর আপনারা কোথায় পান?’