যাত্রীর পেটে করে ভারতে যাচ্ছে সোনা
যশোরের বেনাপোল থেকে কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। সীমান্ত পার হলেই কলকাতা যেতে খুব কম সময় লাগে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, এ কারণে ভারতে সোনা পাচারের জন্য অন্যতম রুট হয়ে উঠেছে বেনাপোল। আর ওই পথে বৈধ পাসপোর্টধারী যাত্রীদের পেটে করে সোনা যাচ্ছে ভারতে।
গত ১০ মাসে ওই সীমান্ত থেকে ৪৩ কেজি সোনা জব্দ করা হয়েছে। এসব ঘটনায় আটক হয়েছে ৩৬ জন। আটক ব্যক্তিদের বেশিরভাগই পেটে করে সোনা বহন করছিলেন। স্থানীয় ক্লিনিকে নিয়ে ওষুধ খাইয়ে পেট থেকে বের করা হয় সোনা।
গত ১০ মাসে এসব ব্যক্তির কাছ থেকে দুই কোটি টাকাও উদ্ধার করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা।
এ বছরের শুরু থেকে চোরাই পথ ছেড়ে পাসপোর্ট যাত্রীদের মাধ্যমে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টকে সোনা পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কাছে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় বেনাপোল থেকে দ্রুত কলকাতায় পৌঁছানো যায়।
সম্প্রতি যেসব বড় ধরনের সোনার চালান আটক হয়েছে তার বেশির ভাগই যাত্রীদের পেটের ভেতর থেকে। যাত্রীদের আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় বেনাপোলের বিভিন্ন ক্লিনিকে। এরপর ওষুধ খাইয়ে তাঁদের পেট থেকে বের করা হয় সোনা।
আটক পাচারকারীদের একজন জানান, এক এক চালানে ১০ থেকে ১৫টি করে সোনার বার পাচার করার জন্য চুক্তি হয়। প্রতিটি সোনার বার পাচারের জন্য মিলে এক হাজার করে টাকা।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপকমিশনার আবদুস সাদেক বলেন, ‘বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়ে আমরা স্বর্ণসহ পাচারকারীদের আটক করে থাকি। পাশাপাশি আমাদের গোয়েন্দারা সব সময় সজাগ দৃষ্টি রাখে, যাতে দেশের সোনা পাচার হয়ে বাইরে না যায়।’
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান জানান, স্বর্ণ পাচারের কোনো তথ্য পেলে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে তা আটক করা হয়। বেনাপোল পোর্ট থানা বিগত দিনগুলোতে অনেক বড় বড় সোনার চালান আটক করেছে।
যশোরে ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল হক জানান, ভারতে সোনার চাহিদা বেশি থাকায় আন্তর্জাতিক পাচারকারী চক্রের সদস্যরা দেশটিতে প্রচুর সোনা পাচার করছে। বিভিন্ন দেশ থেকে বিমানপথে সোনা আসার পর শুল্ক কর্মকর্তাদের নজর এড়িয়ে বেশ কিছু চালান দেশের ভেতরে প্রবেশ করে। পরে বিভিন্ন সীমান্তের বৈধ ও অবৈধ উভয় পথ ব্যবহার করে ভারতে পাচার হয়ে যাচ্ছে এসব সোনা।