ছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, আইএইচটি বন্ধ ঘোষণা
রাজশাহী ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) ছাত্রীদের পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
আজ বুধবার সকালে আইএইচটি ক্যাম্পাসে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য আইএএইচটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
ইনস্টিটিউটের ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছাত্রলীগের সাবেক কয়েকজন নেতাকর্মী বহিরাগতদের নিয়ে ছাত্রীদের হোস্টেলের সামনে প্রায় সময় অবস্থান করেন এবং ছাত্রীদের নানাভাবে উত্ত্যক্ত করেন। এর প্রতিবাদ জানাতে এবং নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে আজ সকাল ১০টার দিকে তাঁরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন। এর একপর্যায়ে অধ্যক্ষের কক্ষের সামনে গিয়েও বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা।
এ সময় ছাত্রীদের একটি প্রতিনিধিদল অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের দাবি জানান। পুলিশ আন্দোলনরত ছাত্রীদের অধ্যক্ষের কক্ষ থেকে বের করে আনার সময় তাঁদের ওপর হামলা চালান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাঁরা চার ছাত্রীকে পিটিয়ে আহত করেন। এই ছাত্রীদের রক্ষা করতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এগিয়ে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ছাত্রলীগের হামলায় আহত ছাত্রীরা হলেন মোহনা, জ্যোতি, নাবিলা ও মীম। তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত ছাত্রী এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আইএইচটি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, সহসভাপতি মিজান, ফয়সাল, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন তুহিনের নেতৃত্বে ছাত্রীদের ওপর এই হামলা চালানো হয়।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে কথা বলতে আইএইচটি শাখা ছাত্রলীগের কোনো নেতার সঙ্গেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। বারবার টেলিফোন করা হলেও অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইএইচটির অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন দাবি নিয়ে ছাত্রীরা আমার কাছে এসেছিল। তবে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তাদের হোস্টেলের ভেতরে চলে যেতে বলা হয়। তারা আমার রুম থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার জের ধরে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা আরো বেড়ে যায়।’
অধ্যক্ষ বলেন, এই ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে একাডেমিক কাউন্সিলের সভা ডাকা হয়। সভা শেষে আইএইচটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ছাত্রদের দুপুর ১টার মধ্যে এবং ছাত্রীদের বিকেল ৩টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
নির্দেশনা অনুযায়ী ছাত্রীরা হল ত্যাগ করেছে জানিয়ে ড. সিরাজুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি খুলে দেওয়া হবে।
নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান হাফিজ জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে থাকায় পরিস্থিতি বেশি দূর গড়াতে পারেনি। পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। বর্তমানে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইএইচটি ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।