বান্দরবানে পার্বত্য চুক্তির ২ দশক পূর্তি উদযাপন
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বান্দরবানে উদযাপিত হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির দুই দশক পূর্তি।
আজ শনিবার সকালে স্থানীয় রাজারমাঠে বর্ষপূতিকে ঘিরে সেনা রিজিয়নের উদ্যোগে দুদিনব্যাপী চিকিৎসা শিবির, স্বেচ্ছায় রক্তদান, শীতবস্ত্র ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠান শুরু হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বান্দরবান ৬৯ সেনা রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়ের সালেহীন। উদ্বোধনের পর অতিথিরা দুই হাজারেরও বেশি গরিব অসহায় পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন। এ ছাড়া শহরের ১০টি স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন তাঁরা। পরে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
সেনা রিজিয়নের জিএসটু মেজর মেহেদী হাসান জানান, শান্তিচুক্তির দুই দশক পূর্তি উপলক্ষে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দুদিনব্যাপী ফ্রি চিকিৎসাসেবা, স্বেচ্ছায় রক্তদান, শীতবস্ত্র ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং প্রীতি ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়েছে। দুই হাজারের বেশি দরিদ্র অসহায় পাহাড়ি-বাঙালি রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা, ওষুধ ও শীতবস্ত্র দেওয়া হয়েছে। ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। আর স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচিরও আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়ের সালেহীন বলেন, চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ায় নতুন করে কোনো সন্ত্রাস নাই। পাহাড়ের সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলোর দোরগোড়ায় সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো পৌঁছে দিতে চাই। পার্বত্যাঞ্চলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে পর্যটনশিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পাহাড়িরা উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণ এবং বিক্রির নিশ্চয়তা নিশ্চিত হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে।
বিশেষ অতিথি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা বলেন, পার্বত্য শান্তিচুক্তির ফলে পাহাড়ে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। এ অঞ্চলের মানুষগুলো এখন শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিকভাবে অনেক দূর এগিয়েছে। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ছোঁয়া লেগেছে পাহাড়ের প্রান্তিক জনপদেও। শান্তিচুক্তির সুফল ভোগ করছে পার্বত্যবাসী। দুর্গমাঞ্চলে গড়ে উঠেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং স্বাস্থ্য ক্লিনিক। পাহাড়ের মানুষের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কাজ করছে সরকার।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমা, বিজিবির বান্দরবান সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল মো. ইকবাল হোসেন, পৌরসভার মেয়র মো. ইসলাম বেবী, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, সিভিল সার্জন ডা. অংসুই প্রু মারমা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মফিদুল আলম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুছ, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কাজল কান্তি দাশ, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষ্মীপদ দাশ প্রমুখ।