‘পঞ্চগড়-দিনাজপুর-নওগাঁ-নাটোর-পাবনা’ নৌপথের খননকাজ উদ্বোধন
নওগাঁর আত্রাইয়ে ‘পঞ্চগড়-দিনাজপুর-নওগাঁ-নাটোর-পাবনা’ নৌপথের খননকাজের উদ্বোধন করেছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নওগাঁর আত্রাই উপজেলা সদরে মোল্লা আজাদ মেমোরিয়াল কলেজ চত্বরে এই উপলক্ষে সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সরকারি এক তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছে, ‘পঞ্চগড়-দিনাজপুর-নওগাঁ-নাটোর-পাবনা’ নৌপথের খনন হলে বাঘাবাড়ী নদীবন্দরের সঙ্গে নওগাঁ, নাটোর ও পাবনা জেলার নৌপথে সরাসরি নৌ-যোগাযোগ এবং সহজলভ্য পরিবহন ব্যবস্থা অক্ষুণ্ণ থাকবে। গোমনী, আত্রাই, করতোয়ার ৪৪ কিলোমিটার অংশের ৩৫ লাখ ঘনমিটার পলি ড্রেজিং করা হবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মেসার্স ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড ৪৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে খননকাজ সম্পন্ন করবে। নৌপথটি ৮০ ফুট প্রশস্ততা ও ৮ ফুট গভীরতায় খনন করা হবে। এতে সারা বছর ‘পঞ্চগড়-দিনাজপুর-নওগাঁ-নাটোর-পাবনা’ নৌপথ ২৪৪ মিটার গভীরতা থাকবে।
নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, বিগত সরকারগুলোর অযত্ন ও অবহেলায় দেশের অনেক নদী নাব্যতা হারিয়ে ফেলেছিল; আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা ও খননের কাজ গতিশীল করেছে। সরকার গত মেয়াদে ১৪টি ড্রেজার কিনেছে। চলতি মেয়াদে আরো ২০টি ড্রেজার কেনার কাজ চলছে। এ ছাড়া বেসরকারিভাবে আরো ৫০টি ড্রেজার সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব ড্রেজার দিয়ে নদী খননের কাজ চলছে। এ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার ৪০০ কিলোমিটার নৌপথ খনন করা হয়েছে।’
শাজাহান খান বলেন, সরকার সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৩টি নৌপথ খননের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, নদীর নাব্যতা রক্ষা, দখল ও দূষণরোধে ‘টাস্কফোর্স’ গঠন করা হয়েছে। নদীতীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বিভিন্ন স্থানে ‘ইকোপার্ক’ নির্মাণ করা হয়েছে।
দেশের নৌপরিবহন খাতে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে নৌমন্ত্রী বলেন, ‘এর আগে চট্টগ্রাম বন্দর ও মোংলা বন্দর প্রায় মরে গিয়েছিল। কিন্তু এ সরকারের সময় তা আবার জেগে উঠেছে। অতীতে সাড়ে ১১ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। কিন্তু আমাদের উদ্যোগে কেবল গত এক বছরে লাভ করেছে ৭০ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য বর্তমানে রিজার্ভ হয়েছে সাড়ে নয় হাজার কোটি টাকা, যা এ ক্ষেত্রে অভাবনীয় উন্নয়ন। এর আগে কখনো তা সম্ভব হয়নি।’
শাজাহান খান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাফল্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, পদ্মা সেতুর কাজ দেশের নিজস্ব অর্থায়নে শুরু হয়েছে। এর নির্মাণকাজ এগিয়ে চলেছে। আগামী ২০১৯ সালের মধ্যে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে।
নৌমন্ত্রী বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, এই অঞ্চলের বাহাদুরাবাদ-বালাসাঘাট নৌপথ আবার চালু হতে যাচ্ছে। এই নৌপথ চালু হলে এই অঞ্চলের মানুষের চলাচলের ক্ষেত্রে অভাবনীয় পরিবর্তন আসবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান কমোডর এম মোজাম্মেল হক, আত্রাই-রানীনগর আসনের সংসদ সদস্য মো. ইসরাফিল আলম, মহাদেবপুর-বদলগাছি আসনের সংসদ সদস্য ছলিম উদ্দিন তরফদার সেলিম, নওগাঁর জেলা প্রশাসক ড. মো. আমিনুর রহমান, পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন, আত্রাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবাদুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নৃপেন্দ্রনাথ দত্ত দুলাল, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী গোলাম মোস্তফা বাদল প্রমুখ।