‘নিখোঁজের কারণ খুঁজতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রয়োজন’
অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে এখন পর্যন্ত ১০ জন নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আলোচিত দুই চরিত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোবাশ্বার হাসান সিজার ও সাংবাদিক উৎপল দাশ।
সাম্প্রতিক সময়ে নিখোঁজের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। নিখোঁজের কারণ খুঁজে বের করতে কমিশন গঠন করে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
সারা দেশের আলোচিত বিষয় হলো নিখোঁজের ঘটনা। একের পর এক নিখোঁজ হয়েছেন সাংবাদিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রকাশক ও ব্যবসায়ী। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে ফলাও করে নিখোঁজের খবর প্রকাশিত হলেও তাঁদের একজনকেও খুঁজে বের করতে পারেননি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
বিগত সময়গুলোতে যাঁরাই নিখোঁজ বা গুম হয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই ছিলেন সন্দেহভাজন অপরাধী অথবা বিরোধী রাজনীতিক পরিচয়ধারী। যাঁর প্রায় সবাইকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়ে গেছেন এমন অভিযোগও উঠেছিল। তবে সাম্প্রতিক নিখোঁজের ধরন দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন দেশের সুশীল নাগরিকসহ সর্বস্তরের মানুষ।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘মোবাশ্বারসহ যে লোকগুলো নিখোঁজ হয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। অপরাধ করে সাজা হয় না, পার পেয়ে যাওয়া যায়, এমন একটি মানসিকতাও মানুষের মধ্যে জন্ম নিয়েছে। একটা বিচারহীনতার সংস্কৃতি মানুষের মধ্যে এসেছে।’
নিখোঁজের ধরন যাই হোক, নিখোঁজ ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব বলে মনে করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে পুলিশের আলাদা একটি এজেন্সি গঠনের মাধ্যমে অপহরণ ও গুম প্রতিরোধে যুগোপযোগী কৌশল অবলম্বন করে কাজ করতে হবে।’
কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘একটা বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া উচিত যে কেন এ প্রবণতা বাড়ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। কিন্তু তারপরও বের করে আনতে পারছি না কেন? এ কারণে মনে হয় ত্রুটিগুলো বের করা উচিত। সে কারণে একটি কমিশন করে পদক্ষেপ নিতে পারি আমরা।’
অপরাধ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জিয়া রহমান বলেন, ‘হঠাৎ করে ব্যাপারগুলো শুরু হলো। একাডেমিক দিক দিয়ে জিনিসগুলো লক্ষ রাখতে হবে। তিনি বলেন, কে করেছে, কী করেছে তা বের করার কাজটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। যত তাড়াতাড়ি এ কাজটি বের করতে পারবে, তত তাড়াতাড়ি মানুষের মধ্যে স্বস্তি আসবে।’
অধ্যাপক জিয়া রহমান আরো বলেন, ‘আমরা যতদূর দেখছি, এরা কেউই সরকারের প্রতিপক্ষ না। সে জায়গাতেই আমার ভীতি।’