‘মেয়ে রাত জেগে ফোন ব্যবহার করত’

‘আমার মেয়ে রাত জেগে ফোন ব্যবহার করত। মোবাইলে কী করছে দেখতে চাইলে দিত না। রাতে লুকিয়ে লুকিয়ে ফোনে কী যেন করত। দেখতে চাইলেও দিত না। গোপন করত।’
অপূর্বা বর্ধন স্বর্ণার বাবা সুব্রত বর্ধন এনটিভি অনলাইনকে এসব কথা বলছিলেন। রোববার স্বর্ণার ঘরে বসেই এসব কথা বলেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর সেন্ট্রাল রোডের নিজেদের বাসা থেকে স্বর্ণার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। মেধাবী ছাত্রী স্বর্ণা পড়ত হলিক্রস স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে। স্বর্ণা সুব্রতর একমাত্র মেয়ে। স্বর্ণার একজন ছোট ভাই আছে।
স্বর্ণার বাবা সুব্রত বর্ধন একজন আইনজীবী। তিনি জানান, মেয়ের লাশ উদ্ধারের দিনই শুনতে পান ‘ব্লু হোয়েল’ নামে একটি স্যোশাল মিডিয়া নির্ভর গেমসের কথা। তিনি দাবি করছেন, ওই গেমসে অংশ নিয়েই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে তাঁর মেয়ে।
অভিযোগ উঠেছে ব্লু হোয়েল গেমসটি এতে অংশগ্রহণকারীদের আত্মহত্যা প্রবণ করে তোলে। বিশ্বের একাধিক দেশে এ গেমসে অংশ নেওয়া একাধিক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগও আছে।
স্বর্ণার লেখা ‘সুইসাইড নোটে’ ওই গেমসের একটি চিহ্ন আঁকা ছিল। এ ছাড়া ওর পায়েও এ ধরনের চিহ্ন আঁকা ছিল।
সুব্রত বলেন, ‘গত পনের বা বিশ দিন আগে আমি স্বর্ণার মোবাইল চেক করলে চাইলে সে অভিমান করে। এর পর আমি তাঁর মাকে বলি মোবাইলটা নিয়ে রেখে দেওয়ার জন্য। দুদিন তাঁর কাছে থেকে মোবাইলটা নিয়ে রেখে দেওয়া হয়। ওই দুদিন ও খুব মন খারাপ করে। কথা বলা বন্ধ করে দেয়।’
সুব্রত বর্ধন বলেন, ‘স্বর্ণা তাঁর মাকে বলত আমাকে তোমরা বিশ্বাস কর না। আমি সব সময় স্বর্ণাকে বোঝাতাম, কোনো দিন মারধর করিনি। তাকে কাউন্সিলিং করতাম। আমি একদিন রাত ৩টায় চুপ করে তাঁর রুমের দরজা খুলে দেখি ও মোবাইলে কী যেন দেখছে। আবার কাজও করছে সেখানে। আমাকে দেখেই সে মোবাইলটা লুকিয়ে ফেলতে চায়।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে আমি তার কক্ষের ঢোকার মুহূর্তেই সে কিছু গোপন জিনিস ডিলিট বা সরিয়ে ফেলেছে।’
সুব্রত বলেন, ‘আমার মেয়ের মুখে কোনোদিন আমি এই গেমটির নাম শুনি নাই। কিন্তু মারা যাওয়ার দিন আমি এ সম্পর্কে শুনি। বাসায় ভিড়ের মধ্যে থেকে কেউ একজন বলে মনে হয় স্বর্ণা ব্লু হোয়েল গেমসে আসক্ত ছিল।’