‘আঙ্গরে গরুর খাওয়ার নাই, আঙ্গরও খাওয়ার নাই’
যমুনার পানি কমতে শুরু করায় জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে জেলায় বন্যার্ত মানুষের প্রয়োজনীয় খাবার ও গো-খাদ্যের সংকট এখনো তীব্র।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জামালপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী নব কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন, জেলার বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনার পানি এখনো বিপৎসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে সার্বিকভাবে উজানে যমুনার পানি কমছে। এতে জেলার ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ ও মাদারগঞ্জ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কিন্তু ভাটিতে ব্রহ্মপুত্র,ঝিনাইসহ শাখা নদীর পানি ছড়িয়ে পড়ায় মেলান্দহ, সরিষাবাড়ি, বকশীগঞ্জ ও জামালপুর সদরের বিস্তীর্ণ এলাকার বাড়িঘর এখনো পানির নিচে।
জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাসেল সাবরিন জানান, বন্যার পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর ফসলি জমি। বন্ধ রয়েছে এক হাজার ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, টানা এক সপ্তাহের বন্যায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। খাবার ও গো-খাদ্যের সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে। নিজেদের ঘরে খাবার নেই। এর মধ্যে গো-খাদ্য জোটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বানভাসি লোকজনকে।
বন্যা নিয়ে জানতে চাইলে ইসলামপুরের চিনাদলি গ্রামের এক কৃষক বলেন, ‘আমাদের বাড়ি নদীবাতায় (নদীর পাশে)। নদীবাতায় আমরা দুইদিন পানির মধ্যেই আছিলাম। গরু-বাছুর সব পানির মধ্যেই আছিল। আমরাও পানির মধ্যে আছিলাম। তারপর আমরা … এখানে আসছি। আসার পর আমরা এখানে আঙ্গরে (আমাদের) গরুর খাওয়ার (খাবার) নাই, আঙ্গরও খাওয়ার নাই। আমরা যদি এক বেলা পাই, আরেক বেলা পাই না। এইভাবে কষ্ট করতাছি।’
‘মশায় খায়, রোইদে পুড়ে, রাইতে বিষ্টি (বৃষ্টি) আসে। এইভাবে আমরা কষ্ট করতাছি।’
দুর্ভোগের বিষয়ে চিনাদলির আরেক কৃষক বলেন, ‘নিজেরাই কী খাই, গরুরেই কী খিলাই। চাইর-পাঁচদিন ধইরে এই জায়গায় আছি। গরুর তো খাবার নাই। নিজেগরই খাবার নাই, দেহেন্না অবস্থা। কাহিল অইয়া গেছে গা। গরু কী খিলামু।’