কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার এক সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে, রাজীবপুর উপজেলার বটতলা এলাকায় পাকা সড়কের ১৫ ফুট ধসে গেছে। এতে করে পার্শ্ববর্তী বালিয়ামারী, জালছিড়ার পাড়, মিয়াপাড়া, বটতলা মণ্ডলপাড়া ও কলেজপাড়াসহ সাত গ্রামের মানুষের যোগাযোগে দুর্ভোগ বেড়েছে। এসব এলাকার লোকজনকে ৮-১০ কিলোমিটার ঘুরে উপজেলা শহরে যেতে হচ্ছে।

রাজীবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান শফিউল আলম জানান, রাস্তার ধসে যাওয়া অংশে বালুর বস্তা ফেলে যোগাযোগ স্বাভাবিক করার কাজ চলছে। 

নদ-নদী তীরবর্তী চর ও দ্বীপচরসহ জেলার সাত উপজেলার ৪২ ইউনিয়নের পাঁচ শতাধিক গ্রামের দুই লক্ষাধিক মানুষ গত আট দিন পানিবন্দি জীবনযাপন করছেন। পানিবন্দি বেশির ভাগ মানুষের ঘরের সঞ্চিত খাবার শেষ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা খাদ্য সংকটে পড়েছেন।

এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। অনেক বানভাসি পরিবার ঘরের ভেতর উঁচু মাচা বেঁধে কষ্টে জীবনযাপন করছেন। চারণভূমি তলিয়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের সংকট। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদ্রাসাসহ দুই শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. বেলাল হোসেন জানান, বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চার হাজার পরিবারের সবাই পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে এক হাজার পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। আরো তিন হাজার পরিবার এখনো ত্রাণের চাল পায়নি।

বন্যার্তদের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে চারশ টন চাল, ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও চার হাজার শুকনো খাবার প্যাকেট বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে অভিযোগ করেছেন জনপ্রতিনিধিরা।

জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান জানান, প্রতিদিনই বন্যার্তদের জন্য বরাদ্দ আসছে এবং আমরা তা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিতরণ করছি। ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া আগামী রোববার কুড়িগ্রামের বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে আসবেন।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি দুই সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার, সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি ১৭ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার এক সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।