শরীয়তপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, স্বামী পলাতক
শরীয়তপুর সদর উপজেলার পূর্ব চরোসুন্দি গ্রাম থেকে গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় রেশমা বেগম (২৮) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। আর ঘটনার পর থেকেই রেশমার স্বামী ফরিদ সরদারসহ তাঁর পরিবারের সবাই পলাতক।
রেশমার পরিবারের অভিযোগ, যৌতুকের দাবি পূরণ করতে না পারায় স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন রেশমাকে হত্যা করে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছে। এ ঘটনায় পালং মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
পালং মডেল থানা পুলিশ, ওই নারীর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের পূর্ব চরোসুন্দি গ্রামের আবদুর রব সরদারের ছেলে ফরিদ সরদারের সঙ্গে সাত থেকে আট বছর আগে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার সূর্যমণি গ্রামের জুলহাস ঘরামীর ছোট মেয়ে রেশমা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাঁদের ঘরে তারিকুল (৫) ও ফারিয়া (২ মাস) নামের দুটি সন্তান জন্ম নেয়।
বিয়ের পর থেকেই ফরিদ সরদার তাঁর স্ত্রী রেশমাকে যৌতুকের জন্য মাঝে মাঝেই মারধর করতেন। রেশমার বাবা-মা মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে এরই মধ্যে দুই লাখ টাকা ও তিন ভরি স্বর্ণালংকার মেয়েকে দেন। এর পরও মাঝেমধ্যেই টাকা-পয়সা চেয়ে স্ত্রীকে চাপ দিতেন ফরিদ।
বুধবার রাতে যৌতুকের টাকা দেওয়া নিয়ে স্বামী ফরিদের সঙ্গে রেশমার কথাকাটাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে রেশমাকে মারতে মারতে ঘর থেকে বাইরে নিয়ে পার্শ্ববতী বাঁশঝাড়ে নিয়ে যান ফরিদ। সেখানে রেশমাকে বেদম মারপিট করেন তিনি। পরে বৃহস্পতিবার সকালে বাগানে একটি কাঁঠালগাছের সঙ্গে রেশমার লাশ ঝুলে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রেশমার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
এদিকে বুধবার রাতেই দুই সন্তান, বাবা আবদুর রব সরদার ও মা চানভানু বেগমকে নিয়ে পালিয়ে যান ফরিদ সরদার।
নিহত রেশমার বাবা জুলহাস ঘরামী বলেন, যৌতুকের জন্য তাঁর মেয়েকে ফরিদ সরদার, তার বাবা ও মা মিলে হত্যা করে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে গেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই ) মো. সজীব বলেন, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে রেশমা নামে গৃহবধূকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে গাছের সঙ্গে দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্বামীর বাড়ির সবাই পলাতক।
এসআই আরো বলেন, এ ঘটনার তদন্ত চলছে। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে রিপোর্ট পাওয়া গেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।