প্রতিবাদকারীদের মামলা প্রত্যাহার চান তথ্যমন্ত্রী
সুপ্রিম কোর্টের সামনে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে স্থাপিত ভাস্কর্য সরানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলে শামিল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) আয়োজিত সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী মানববন্ধনে এ দাবি জানান দলটির একাংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
তথ্যমন্ত্রী এ সময় বলেন, ‘হেফাজতি সাম্প্রদায়িক তেঁতুল হুজুরচক্রের সঙ্গে যেকোনো রাজনৈতিক লেনদেন, রাজনৈতিক সমঝোতা-ওঠাবসা বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য আত্মঘাতী। যারা এই ভাস্কর্য স্থাপনকে কেন্দ্র করে মিছিল সভা-সমাবেশ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রদত্ত মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন।’
বহু আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে হঠাৎ করেই ভাস্কর্য অপসারণ করা হয়। এর প্রতিবাদে গত শুক্রবার দুপুরে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর জোট প্রগতিশীল ছাত্রজোটসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ তাঁদের ওপর চড়াও হয়। দফায় দফায় জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়। আটক করা হয় চারজনকে।
তাঁরা হলেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, ঢাকা কলেজের সভাপতি মোরশেদ আলীম, লালবাগ থানার সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমীন হোসেন জয় ও বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আরিফ নূর। পরে রাতে শাহবাগ থানায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। এতে হত্যাচেষ্টাসহ নয়টি ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
গতকাল শনিবার তাদের ঢাকা মহানগর আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠান। আজ তাঁদের মামলার শুনানি শেষে আদালত জামিন মঞ্জুর করেন।
গত ফেব্রুয়ারি থেকে সুপ্রিম কোর্টের সামনে ‘গ্রিক দেবীর মূর্তি’ স্থাপন করা হয়েছে—এমন দাবি করে এর অপসারণের দাবি করে আসছিল হেফাজতে ইসলামসহ ধর্মভিত্তিক নানা সংগঠন।
এ বছরের রমজানের আগে ভাস্কর্য অপসারণের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছিল ওই সব সংগঠন। এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অপসারণ করা হয়েছে শিল্পী মৃণাল হকের গড়া ভাস্কর্যটি।
অপসারণের খবর পেয়ে মধ্যরাতেই সুপ্রিম কোর্টের গেটের সামনে জড়ো হন প্রতিবাদকারীরা।