যে মেলা কেবলই সুখী দম্পতিদের!
মেলাটা কেবল সুখী দম্পতিদের জন্য। দাম্পত্য জীবনে তাঁরা নিজেদের সুখী মনে করেন। তাঁরা হাজির হয়েছিলেন। এ রকম প্রায় তিন হাজার দম্পতি দিনভর মেতে ছিলেন উৎসবে।
পৃথিবীর অন্য কোথাও নয় বাংলাদেশের শরীয়তপুরে হয়েছে ওই মেলার আয়োজন। আজ রোববার জেলা পুলিশ লাইনসের মাঠে ব্যতিক্রমধর্মী মেলার আয়োজন করে জেলা পুলিশের উইমেনস অ্যান্ড চাইল্ড সাপোর্ট সেন্টার।
আয়োজকেরা জানান, পারিবারিক কলহ দূর করে সুখী দাম্পত্য জীবনকে উৎসাহিত করাই ছিল মেলার উদ্দেশ্য। আয়োজনের একটি প্রতিপাদ্য বিষয়ও ছিল- ‘প্রেমের অনবদ্য পঙক্তিমালায় রচিত হোক আপনার দাম্পত্য জীবনের অলিখিত সুখ।’
মেলায় ২০ দম্পতিকে পুরস্কৃত করা হয়। এ ছাড়া ৩০ দম্পতিকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়। ওই ৫০ দম্পতি ‘সুখী দাম্পত্যের খোঁজে’ রচনা লিখে পুরস্কৃত হন।
সকাল ১০টায় দাম্পত্য মেলার উদ্বোধন করেন শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য বি এম মোজাম্মেল হক। বিকেল ৩টায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ী সুখী দম্পতিদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক।
মেলায় অংশ নিতে সকাল থেকেই মাঠে জড়ো হতে থাকে কয়েক হাজার সুখী দম্পতি। বিভিন্ন ধরনের বিনোদনের পাশাপাশি গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী সাপখেলা, বানরের খেলা, রাধা চক্কর, জাদু প্রদর্শন ও বাউল গানের আসর মাতিয়ে রাখে মেলা প্রাঙ্গণ।
চলতি বছর ‘সুখী দাম্পত্যের খোঁজে’ রচনা প্রতিযোগিতার লেখা আহ্বান করে স্থানীয় সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। এক হাজার শব্দের মধ্যে লিখতে বলা হয়, কীভাবে পারিবারিক কলহ দূর করে সুখী দাম্পত্য জীবন নিশ্চিত করা যায়।
লেখা নেওয়া হয় ১ মার্চ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে দম্পতিরা লেখা পাঠান। এরই ভিত্তিতে ২০ টি দম্পতিকে বিশেষ পুলিশ সুপার সম্মাননা ও বিভিন্ন পুরস্কার দেওয়া হয়। এ ছাড়াও ৩০টি সুখী দম্পতিকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়।
মেলায় কথা হয় সুখী দম্পতিদের সঙ্গে। দাম্পত্য জীবনে নিজেদের সুখী মনে করেন পালং বাজারের ব্যবসায়ী খোকন ও তাঁর স্ত্রী ডালিয়া। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করেন সুখী দাম্পত্যের খোঁজে প্রতিযোগিতায়। যাচাই বাছাই শেষে মনোনয়ন পেয়েছেন চূড়ান্ত পর্বের। এই ধরনের অনুষ্ঠান সবাইকে কলহমুক্ত সুখী পরিবার হতে আগ্রহী করে তুলবে বলে মনে করেন তাঁরা। এই ধরনের আয়োজন সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে প্রত্যেকটি পরিবারকেই সুখী দাম্পত্য জীবন গড়তে উৎসাহী করবে বলেও মনে করেন তাঁরা।
দাম্পত্য মেলা উদযাপন কমিটির সভাপতি শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘দাম্পত্য মেলায় জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে অংশ নেওয়া ২০টি সুখী পরিবারকে বিশেষ পুলিশ সুপার সম্মাননা ও বিভিন্ন পুরস্কার দেওয়া হয়। এ ছাড়া ৩০টি সুখী পরিবারকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়।’
সাইফুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমি শুরু করে গেলাম। এর পর থেকে শরীয়তপুর পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতি বছরই এই আয়োজন অব্যাহত থাকবে আশা করি।’