হানিফের মৃত্যু : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যাখ্যা চাইলেন ফখরুল
রাজধানীর আশকোনায় হাজি ক্যাম্পের কাছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) অস্থায়ী ব্যারাকে ‘আত্মঘাতী হামলার দিন গ্রেপ্তার’ এবং পরে মারা যাওয়া হানিফ মৃধার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
র্যাবের বয়ান অস্বীকার করে হানিফ মৃধাকে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ‘তুলে নেওয়ার’ পরিবারের দাবির আলোচনার মধ্যেই আজ সোমবার রাজধানীতে একটি আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব এই ব্যাখ্যা দাবি করলেন।
হানিফের মৃত্যুর ব্যাপারে গত শনিবার র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, আশকোনায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় একজন নিহত হয়। ওই দিন সন্দেহভাজন হিসেবে হানিফকে আটক করা হয়। র্যাব কার্যালয়ে নেওয়ার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।
অপরদিকে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, বরিশালে চরমোনাই পীরের মাহফিল থেকে ফেরার পথে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি হানিফ মৃধা ও তাঁর বন্ধু মো. সোহেল হোসেনকে র্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। হানিফের গাড়ির ব্যবসা ছিল। তিনি রায়ের বাজারের শাহ আলীর গলিতে পরিবার নিয়ে থাকতেন।
আজকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটি পত্রিকায় হানিফের মৃত্যু সংক্রান্ত শিরোনাম ‘র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর মৃত্যু’ উল্লেখ করে বলেন, ‘পরিবার বলছে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সাদা পোশাকধারী র্যাবের লোকেরা তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। তাঁর স্ত্রী দাবি করেছেন, এর মধ্যে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং ছয় লাখ ৭০ হাজার টাকা চেক তাঁকে লিখে দিতে হয়েছে। তারপর এই ঘটনা।’
‘আমি অত্যন্ত স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দাবি করছি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে। কোনটা সত্য, সুষ্ঠু তদন্ত করে জবাবটা দিতে হবে। একটা নয়, অসংখ্য ঘটনা এ রকম ঘটছে।’
‘যদি পরিবারের দাবি সঠিক হয়, তাহলে কি এ কথা আমরা মনে করতে পারি, একটা অত্যন্ত গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, এই লোকগুলোকে তুলে নিয়ে গিয়ে পরবর্তী সময়ে তাদের জঙ্গি বানিয়ে হত্যা করা হচ্ছে, বা এই জঙ্গিবাদকে প্রকাশ করার জন্য তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে’, যোগ করেন মির্জা ফখরুল। জঙ্গিবাদকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে গিয়ে সরকার আগুন নিয়ে খেলছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
২০ দলীয় জোটের শরিক দল ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) আজকের এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সভায় জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব আরো অভিযোগ করেন, ‘জঙ্গিবাদ নির্মূলে বিএনপির আহ্বানকে অনেক আগেই নাকচ করে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারই জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে যার পরিণতি হবে ভয়ঙ্কর।’
এ সময় তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় না করে উল্টো ভারতের সঙ্গে দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি হলে তা জনগণ মানবে না বলেও উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা তিস্তা নদীর পানি চাই। আমরা চাই, আমাদের সীমান্তে যেন অন্যায়ভাবে বেআইনিভাবে আমাদের নাগরিকদের হত্যা করা না হয়। কিন্তু তা কোনোভাবেই আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে নয়। আমাদের স্বার্থকে নষ্ট করে নয়।’
অবিলম্বে সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আবারও নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি জানান মির্জা ফখরুল।