জয়পুরহাটে কমিটি বাতিলের দাবিতে বিএনপি কার্যালয়ে আগুন
জয়পুরহাট জেলা বিএনপির নতুন কমিটিতে আইনজীবী নাফিজুর রহমান পলাশকে সাধারণ সম্পাদক করার প্রতিবাদ ও ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে জেলা কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন দলের একাংশের কিছু নেতাকর্মী।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কার্যালয়ে আগুন লাগানো হয়। ওই সময় পলাশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও তাঁর কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জয়পুরহাট থানার সামনে থেকে পলাশের একটি কুশপুতুল নিয়ে মিছিল বের করেন জেলা বিএনপির একাংশের কিছু নেতাকর্মী। মিছিলটি জয়পুরহাট রেলগেটসংলগ্ন জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে গিয়ে জড়ো হয়। মিছিলকারীদের কয়েকজন তালাবদ্ধ জেলা বিএনপি কার্যালয়ের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে বেশ কিছু চেয়ার ভাঙচুর করেন। পরে চেয়ারসহ বিভিন্ন আসবাবপত্রে আগুন লাগিয়ে দেন তাঁরা।
এ ছাড়া বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পলাশের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন বিক্ষোভকারীরা। সে সময় জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিন্টু নতুন সাধারণ সম্পাদক পলাশকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে অন্যদের নিয়ে দ্রুত ওই এলাকা ছেড়ে চলে যান।
এদিকে বিএনপির কার্যালয়ে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে তার আগেই বিএনপি অফিসের ভেতরে থাকা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রতিকৃতি, বিএনপির চেয়ারপাসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি, ব্যানার, চেয়ার-টেবিলসহ অন্যান্য আসবাবপত্র পুড়ে যায়। এ ছাড়া অগ্নিকাণ্ডে একটি টেলিভিশন, চেয়ার-টেবিলসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। এতে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলা বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী।
এদিকে পুড়ে যাওয়ার খবর পেয়ে কার্যালয়ে যান বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের নেতাকর্মীরা।
ঘটনার পর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মোজাহার আলী প্রধান বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম জিয়া এখানকার নেতানেত্রীদের বিষয়ে অনেক খোঁজখবর নিয়েই এ কমিটি ঘোষণা করেছেন। যাঁরা যোগ্য, তাঁরাই কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। যাঁরা দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন, তাঁদের মূল্যায়ন করা হয়েছে।’
‘এ কমিটির বিরুদ্ধে কারো কোনো বক্তব্য থাকলে নিয়মতান্ত্রিকভাবে তা কেন্দ্রকে জানানোর সুযোগ আছে। কিন্তু এভাবে চোরের মতো হঠাৎ করে অফিস ভাঙচুর কিংবা অগ্নিসংযোগ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা দলের শত্রু। এরা দলের একটি অতিক্ষুদ্র ও বিপথগামী অংশ। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে আজ শুক্রবার জয়পুরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান, জেলা বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। অভিযোগ না পাওয়ায় এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।