চার সন্তানকে হারিয়ে শোকে পাথর পারুল
মাঝনদীতে নৌকাটি চলছিল। আকাশের অবস্থা ভালো ছিল না। আকাশ কালো হতেই যাত্রীরা নৌকা তীরে থামাতে বললেন। এঁদের মধ্যে ছিলেন পারুল বেগম। সঙ্গে তাঁর চার সন্তান। মা বলেই হয়তো ভবিষ্যৎ শঙ্কায় তাঁর বুকটা কেঁপে উঠেছিল।
urgentPhoto
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নরসিংদীতে মেঘনা নদীতে নৌকাডুবিতে পারুল হারিয়েছেন তাঁর চার সন্তানকে। সন্তানদের হারিয়ে পাথর হয়ে আছেন তিনি। খবর পেয়ে তাঁর প্রবাসী স্বামী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সেখানকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর যাত্রীদের কথা না শোনা মাঝি এখন পলাতক।
মেঘনা নদীর নরসিংদীর সীমান্তবর্তী এলাকায় বগারগুদ গ্রামে শতাধিক যাত্রী নিয়ে নৌকাটি ডুবে যায়। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার গোপালদী থেকে শতাধিক যাত্রী নিয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকাটি নরসিংদী সদর উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের বগারগুদ আসছিল।
নরসিংদী সদর উপজেলার পাইকারচর গ্রামের পারুলের দুই বছর বয়সী শিশু বায়েজিদের লাশ উদ্ধার হয় গতকাল বৃহস্পতিবার। আজ শুক্রবার সকালে নারায়ণগঞ্জ থেকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) পাঁচ সদস্যের ডুবুরিদল দুর্ঘটনা এলাকায় অভিযানে নামে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দুর্ঘটনাকবলিত নৌকাটিকে শনাক্ত করে তারা। এরপর একে একে উদ্ধার করে পারুলের তিন সন্তান সুমাইয়া (৮), ফয়সাল (৬) ও উম্মায়েনীর (৪) লাশ। উদ্ধার হয় সদর উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের বগারগুদ গ্রামের নূরজাহান বেগম (৬০) ও ফালানি বেগম (৫৫) এবং কালিকাপুর গ্রামের ফারজানার (৮) লাশ।
সদর উপজেলার বঙ্গারচর নৌপুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন জানান, ঘটনার পর থেকে দুর্ঘটনাকবলিত নৌকার মাঝি পলাতক। ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।