৩০ ভাগ করোনা রোগীও চিকিৎসা পাচ্ছে না : রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘লকডাউন খুলে দিয়ে জনগণকে মৃত্যুকূপের দিকে, ভয়ংকর মৃত্যুগুহার দিকে ঠেলে দিয়েছে সরকার। এখন পর্যন্ত যত মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে তার শতকরা ৩০ ভাগ রোগীর চিকিৎসা দিতে পারছে না সরকার।’ তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে শয্যা নেই, চিকিৎসা নেই, অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই, ভেন্টিলেটর নেই। চিকিৎসা না পেয়ে দেশ-বিদেশের মানুষ দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। তাহলে সরকার যে এত উন্নয়নের কথা বলছে, তারা কী করেছে? শুধু ক্যাসিনো তৈরি করেছে সরকারি দলের লোকেরা।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩৯তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শনিবার রাজধানীর কাফরুলের স্বাধীনতা চত্বর এলাকায় গরিবদের মধ্যে খাদ্য বিতরণকালে এ বিএনপিনেতা এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালে কোনো রাজনীতি করতেন না, তিনি সেনাবাহিনীর একজন মেজর ছিলেন। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, আবার ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর একটি ভিন্ন ধরনের অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সিপাহী-জনতা তাঁকে ক্ষমতায় আসীন করেন। আমরা তার পরে দেখেছি, তিনি ক্ষমতায় এসেই বহুদলীয় গণতন্ত্র দিলেন। যারা গণতন্ত্রের কথা বলে ক্ষমতায় এসেছিলেন তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিলেন। জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র দিলেন। খবরের কাগজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, হাজার হাজার সাংবাদিক বেকার হয়ে গিয়েছিল। জিয়াউর রহমান সব সংবাদপত্র খুলে দিয়েছিলেন। দেশে যখনই সংকট এসেছিল তখনই এই মহান নেতা গোটা জাতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এই মহান মানুষটিকে নিয়ে এত বিষোদগার করেছে, এত কটুকথা বলেছে যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। যে ব্যক্তিটি নিজের জীবন ও পরিবার কোথায় আছে তার তোয়াক্কা না করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লেন, তাঁর বিরুদ্ধে বিষোদগার। তাহলে এরা বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার, আসলে এরা হচ্ছে ক্যাসিনোর চেতনার সরকার, টাকা লুটপাটের সরকার, চাল-গম আত্মসাতের সরকার।
সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, ‘গত নির্বাচনে কেউ নির্বাচনে গেল না, নির্বাচনে এরা জিতে গেল। নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিল যে, তারা জিতে গেছে। এই যে বেহায়াপনা, এই যে নির্লজ্জতা, এটাই তারা করছে। যার কারণে আজকে কী অবস্থা, এই যে করোনাভাইরাসের প্রকোপ, মানুষ রাস্তায় মারা যাচ্ছে, চিকিৎসা পাচ্ছে না, হাসপাতালে চিকিৎসা পাচ্ছে না। আবার আগামীকাল থেকে অফিস খুলে দেওয়া হচ্ছে।’
বিএনপির এ নেতা আরো বলেন, ‘সরকারের লোকেরা এত বড় বড় কথা বলে, দুই মাস গরিব মানুষদের খাওয়াতে পারল না, এ দেশের নিরন্ন অসহায় মানুষদের খাওয়াতে পারল না, শ্রমজীবী রিকশাওয়ালা এদের খাওয়ানোর সামর্থ্য আপনাদের নেই। তাহলে আপনারা ক্ষমতা ধরে রেখেছেন কেন? ক্ষমতা ধরে রেখেছেন মানুষকে কষ্ট দেওয়ার জন্য, আরো বেশি অত্যাচার, আরো বেশি নির্যাতন, আরো বেশি মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য। সবাই এখন আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছে।’
ঢাকা মহানগর কাফরুল থানা বিএনপি আয়োজিত খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- যুবদলের সহসভাপতি রুহুল আমিন আকিল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সহসাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম তেনজিং, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রিয়াজ, শ্রমিক দলের নেতা মতিন প্রমুখ।