ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির নির্বাচনে ‘শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রায় ২৫ শতাংশের মতো’ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। আজ শনিবার রাত সাড়ে ৭টায় লিখিত বক্তব্যে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আজ সকাল ৮টা থেকে বিকেলে ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়। এবারই প্রথম পুরো ঢাকা সিটিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ করা হয়। বিকেলে সাড়ে ৫টার পর থেকে প্রাথমিক ফলাফল আসতে থাকে। দুই সিটিতেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বেশ ব্যবধানেই এগিয়ে যাচ্ছেন। 

নির্বাচনী পরিবেশের চিত্র তুলে ধরে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘কয়েকজন সাংবাদিক নির্বাচনী পরিবেশের কথা আমার কাছে জানতে চেয়েছেন। আমি তাদের বলেছি, নির্বাচনী পরিবেশ সম্পর্কে তাঁরা আমার চেয়ে বেশি অবহিত। কারণ, তাঁরা নিজের চোখে সব দেখেছেন।’

ভোটের সময় নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমি মগবাজারস্থ ইস্পাহানী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ কেন্দ্রে বেলা সাড়ে ১১টায় ভোট দিয়েছি। কেন্দ্রের সাংবাদিকরা আমাকে জানান, সকালে বিরোধী দলের মেয়রের এজেন্ট ছিলেন। তাদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের এই অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের সুযোগ ছিল না। এ ছাড়া আনারস প্রতীকের মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী আমাকে জানিয়েছেন, তাঁর নির্বাচনী এজেন্টকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আমি তাঁকে লিখিত অভিযোগ জানাতে বলেছি।’

মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘আমি সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ২টা পর্যন্ত মোট ১২টি কেন্দ্র পরিদর্শন করি। এই ১২টি কেন্দ্রে আমি সরকারি দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ছাড়া আর কোনো মেয়র প্রার্থীর এজেন্ট দেখতে পাইনি। সকাল ৮টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রগুলিতে প্রায় ১০ শতাংশ ভোট পড়ে।’

নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, ‘নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের যে দৃশ্য দেখা গেছে, তাতে আমি মর্মাহত। আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়ে ব্যবস্থা না নিলে আচরণবিধি থাকা না থাকায় কোনো পার্থক্য থাকে না।’

‘ইভিএম ব্যবহার করে এই নির্বাচনে সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে, এতে কোনো কেন্দ্রে শতকরা ১০০ শতাংশ ভোট পড়েনি এবং নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করার সুযোগ ছিল না। রাতে ব্যালট পেপারে বাক্সভর্তি ও কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়ার অপবাদ থেকে আমরা মুক্ত।’

মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৫ শতাংশের নিচে ভোট পড়েছে। তাতে কি ফলাফলে কিছু আসে যায়?’

নির্বাচন খুবই শান্তিপূর্ণ হয়েছে উল্লেখ করে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া কোনো মারামারি বা রক্তক্ষয় হয়নি। ভোটের মাঠে একপক্ষ ব্যতীত অন্য পক্ষগুলোকে দেখা যায়নি। ভোটের মাঠে অন্যপক্ষগুলোর অনুপস্থিতির কারণ আমার অজ্ঞাত।’