১৯ ভারতীয় ট্রাকচালকের দেশে ফেরার আকুতি
বেনাপোল বন্দরে গত দেড় মাস ধরে আটকে পড়া ১৯ জন ভারতীয় ট্রাকচালক দেশে ফিরতে চান। তাঁরা সাহায্য চান না, চান শুধু দেশে ফিরতে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষই তাদের ফেরত নিচ্ছে না বলে অভিযোগ। ফলে অনাহারে, অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন আটকে পড়া এসব ভারতীয় ট্রাকচালক ও খালাসিরা।
বাংলাদেশে আমদানিকারক ও স্থানীয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ীরা করোনাভাইরাস দুর্যোগে ভারতীয় ট্রাকচালকদের নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে। বিষয়টি ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও তেমন একটা আমলে নেয়নি বলে অভিযোগ বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমানের।
বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ভারতে লকডাউন ঘোষণার আগের দিন গত ২০ মার্চ বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে শিল্প কারখানার কাঁচামালসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে আসেন এসব ট্রাকচালক। পণ্যচালান বেনাপোল বন্দরে আনলোডের পর থেকে তাদের নিজ দেশে ফেরত নেয়নি ভারত।
ভারতের উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা ট্রাকচালক সীতারাম বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে মালামাল নিয়ে এসে আটকে পড়েছি। ভারতের পেট্রাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ আমাদের নিচ্ছে না। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারছি না। কাছে যা টাকা পয়সা ছিল অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। খেয়ে না খেয়ে গাড়িতেই ঘুমাচ্ছি।’
সীতারাম বলেন, ‘বেনাপোল বন্দর, কাস্টমস ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের লোকজন মাঝেমধ্যে কিছু খাদ্য সহয়তা দিয়েছে। তাতে জীবন চলে না। খাদ্য সহায়তা চাই না ,আমরা দেশে ফিরতে চাই।’
ভারতের পেট্রাপোল স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘করোনাভাইরাস আতঙ্ক ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি না থাকায় ট্রাকসহ চালকদের প্রবেশে বাধা দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। আমরাও কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার চেষ্টা করছি। অনুমতি পেলেই ভারতীয় চালকরা ট্রাকসহ বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে আসবেন।’
বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক মামুন কবির তরফদার বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে স্থলবন্দরের ইয়ার্ডের ভেতরেই ট্রাক ও চালকদের রাখা হয়েছে। বন্দর, কাস্টমস ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা চালকদের খাদ্য সহায়তা দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। মাঝেমধ্যে চালক ও হেলপাররা নিজেরাই রান্না করে খাচ্ছেন।’ বিষয়টি দ্রুত সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলেও জানান তিনি। অনুমতি পেলে যেকোনো মুহূর্তে চালক ও ট্রাকগুলো ফেরত পাঠানো হবে।