হেফাজতে মৃত্যু : ওসিসহ চারজনের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ
পুলিশি হেফাজতে আলমগীর হোসেন (৩৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) চারজনের বিরুদ্ধে করা মামলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এই আদেশ দেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) তাপস কুমার পাল বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিচারক ডিবি পুলিশের উত্তরের ডিসিকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আগামী ৫ মার্চ প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
পিপি বলেন, এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তপন চন্দ্র সাহাসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন আলমগীর হোসেনের স্ত্রী মোছা. আলো বেগম। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে বৃহস্পতিবার আদেশ দেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুর রহমান, সহকারী উপপরিদর্শক( এএসআই) নামজুল ও মো. সোহাগ।
মামলার আর্জি থেকে জানা যায়, আলমগীর ভ্যানে করে উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টর এলাকায় পোশাক বিক্রি করতেন। গত ১৬ ডিসেম্বর আলমগীরকে ৭ নম্বর সেক্টরে যেতে বলেন শান্ত নামের এক ব্যক্তি। সেখানে যাওয়া মাত্র উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান আলমগীরের পকেটে হাত ঢুকিয়ে বলেন, পকেটে ইয়াবা আছে। পরে তাঁকে মারধর করা হয়। আসামিরা আলমগীরের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। আলমগীর তাঁর স্ত্রীকে ফোন করে ৫০ হাজার টাকা দিতে বলেন। ভ্যানচালক লালুর মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে দেন আলমগীরের স্ত্রী।
পরবর্তী সময়ে রাত ৩টা পর্যন্ত আলমগীর বাসায় না যাওয়ায় তাঁর স্ত্রী তাঁকে ফোন করেন। থানা থেকে একজন বলেন, আলমগীরের কাছে ইয়াবা পাওয়া গেছে। পরে তাঁর স্ত্রী থানায় যান।
আলমগীর তাঁর স্ত্রীকে জানান, আসামিরা ইয়াবা পাওয়ার মিথ্যা অভিযোগে তাঁকে ধরে এনেছে। আসামিরা পাঁচ লাখ টাকার দাবিতে তাঁকে নির্যাতন করেছেন। টাকা দিতে না পারায় এবং মিথ্যা স্বীকারোক্তি দিতে অস্বীকার করায় মিজানুর রহমান, এএসআই নাজমুল এবং আরেক পুলিশ সোহাগ তাঁকে থানার চারতলায় নিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছে। তাঁকে পঙ্গু করে দিয়েছে।
পুলিশ আলমগীরকে আদালতে নেওয়ার জন্য যখন গাড়িতে তোলে, তখন তিনি খুব অসুস্থ ছিলেন। কয়েকজন মিলে তাঁকে টেনে নিয়ে গাড়িতে তোলে। পরে আদালত থেকে তাঁকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এরপরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর গত ১৯ ডিসেম্বর বিকেলে মারা যান আলমগীর হোসেন ।