স্বাস্থ্য ও কারা অধিদপ্তরের ডিজিকে আইনি নোটিশ
আদালতের আদেশ অমান্য ও অসত্য তথ্য সরবরাহ করার অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও কারা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (ডিজি) আদালত অবমাননার নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আজ রোববার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জে আর খান (রবিন) এ নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বলা হয়েছে, দেশের ৬৮ কারাগারে ৪০ হাজার ৬৬৪ কারাবন্দির ধারণ ক্ষমতা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে দুই-তিন গুণ বন্দি কারাগারে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে ১৪১ কারা চিকিৎসক পদের বিপরীতে চিকিৎসক আছেন মাত্র নয়জন। এতে কারাবন্দিদের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আইনজীবী মো. জে আর খান (রবিন) জনস্বার্থে রিটটি দায়ের করেন।
ওই রিটের শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ২৩ জুন বিচারপতি এ এফ এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন।
রুলে কারাবন্দিদের বাসস্থান ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের ব্যর্থতাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। বেঞ্চ কারা কর্তৃপক্ষকে সার্বিক বিষয়ে আদালতকে অবহিত করার নির্দেশ দেন। এরপর কারা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন তারিখে হলফনামার মাধ্যমে দেশের সব কারাগারে ২৪ জন চিকিৎসক থাকার বিষয়ে নিশ্চিত করে। অবশিষ্ট খালি ১১৭ পদে চিকিৎসক নিয়োগের ব্যাপারেও প্রয়োজনীয় আদেশ প্রার্থনা করেন। এর ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি হাইকোর্ট অনতিবিলম্বে শূন্য পদে ১১৭ জন চিকিৎসক নিয়োগের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে নির্দেশ দেন।
এরপর চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি কারা কর্তৃপক্ষ হলফের মাধ্যমে আদালতকে জানায়, ১৪১ পদের বিপরীতে ১২২ জন চিকিৎসক দেশের বিভিন্ন কারাগারে নিয়োজিত আছেন। তার মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ছয়জন, রাজশাহী বিভাগে ১৮ জন, রংপুর বিভাগে ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৭ জন, সিলেট বিভাগে ১৭ জন, খুলনা বিভাগে ১৬ জন ও বরিশাল বিভাগে ১০ জন নিয়োজিত আছেন। ১২২ জনের মধ্যে সাতজন প্রেষণে ও ১০৫ জন পর্যায়ক্রমে সংযুক্ত আছেন।
আইনজীবী মো. জে আর খান (রবিন) বলেন, একই বিষয়ে গত ৪ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এখনো কারাগারে ১৩৪ চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। সেহেতু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি আদালতের আদেশ অনুসারে কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগ না দেওয়ায় আদালতের আদেশ অমান্য করেছেন।
একইসঙ্গে কারা কর্তৃপক্ষ চিকিৎসক নিয়োগের বিষয়ে সঠিক তথ্য সরবরাহ না করায় তাদের কাজও আদালত অবমাননার শামিল। তাই তাদের বিরুদ্ধেও আদালত অবমাননার নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশ পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক কারাগারে অন্তর্বর্তীকালীন ১১৭ শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হবে বলে জানান আইনজীবী।