স্বামী ঝুলে ছিল ফ্যানের সঙ্গে, বিছানায় স্ত্রীর লাশ
নেত্রকোনা সদর উপজেলায় এক দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। উপজেলার চল্লিশা এলাকার দরিজাগি গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে আজ রোববার সকালে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত দম্পতি হলেন দরিজাগি গ্রামের মৃত আবদুর রশিদের ছেলে কৃষক নূরে আলম উজ্জ্বল (৪০) ও তাঁর স্ত্রী রুবী আক্তার (৩২)।
উজ্জ্বলের মা জাহেরা খানম জানান, আজ ফজরের নামাজের পর তিনি ছেলের ঘরের ভেতরের দরজা খুলে ড্রেসিং টেবিলের ওপর থেকে চাবি আনেন। পরে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ছেলের স্ত্রী ঘুম থেকে উঠে রান্না করতে না বসায় তাঁদের ঘরে গিয়ে দেখেন, তাঁর ছেলে ফ্যানের সঙ্গে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে আছে আর গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছে ছেলের স্ত্রী রুবীর লাশ। এ সময় তাঁর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসার পর পুলিশে খবর দেয়।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোর্শেদা খাতুন ও মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম জানান, উজ্জ্বল এর আগে আরেকটি বিয়ে করেছিলেন। তাঁদের ১৭ বছরের দাম্পত্য জীবনে কোনো সন্তান না আসায় সেই বউকে তালাক দিয়ে দুবছর আগে তাঁরই মামাতো বোন সাতবুড়িকান্দা গ্রামের আবদুল আজিজের মেয়ে রুবী আক্তারকে বিয়ে করেন। তাঁরও এটি দ্বিতীয় বিয়ে। বিয়ের পর স্ত্রীর কথায় বিভিন্ন এনজিও ও ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ নিয়ে তিনি বাড়িতে একটি বিল্ডিং নির্মাণের কাজ শুরু করেন।
এলাকাবাসী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, ঋণের চাপে অথবা সংসারে কোনো সন্তান না আসায় দাম্পত্য কলহের জের ধরে ঝগড়ার একপর্যায়ে স্ত্রীকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করেন উজ্জ্বল। এরপর নিজে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। তবে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।