সৌদিপ্রবাসীদের সমস্যার সমাধান হবে, ধৈর্য ধরুন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সৌদিপ্রবাসীদের আন্দোলন ও বিক্ষোভ না করে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। প্রবাসী শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘সমস্যাটি সমাধানে আমরা সবাই মিলে আন্তরিকভাবে কাজ করছি।’
আজ বুধবার আন্তমন্ত্রণালয়ের এক বৈঠক শেষে নিজ কার্যালয়ে ড. মোমেন সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। সৌদি আরবের সরকার শৃঙ্খলাবিরোধী কোনো কার্যক্রম সমর্থন করে না এবং এ ধরনের বিক্ষোভ প্রবাসী কর্মীদের পক্ষে নেতিবাচক পরিণতি বয়ে আনতে পারে বলেও সতর্ক করে দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ড. মোমেন আরো বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী কখনই প্রবাসীদের কোনো ক্ষতি চান না। প্রধানমন্ত্রী সবসময় প্রবাসীদের কল্যাণে কাজ করছেন। এ সমস্যারও সমাধান হবে।’
এ সময় বৈধ ভিসা এবং আকামার (কাজের অনুমতিপত্র) মেয়াদ আরো তিন মাস বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ সরকার সৌদি সরকারের প্রতি অনুরোধ করেছে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সৌদি আরবের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার আশা প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, ‘আমরা গতকাল এ (মঙ্গলবার) অনুরোধ জানিয়েছি।’
কারো দ্বারা প্রভাবিত না হতে শ্রমিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিবাদী শ্রমিকদের পক্ষে দাবিপত্র জমা দিয়েছেন তিনি প্রবাসী নন, রাজনীতিতে জড়িত স্থানীয় একজন।’
এদিকে সৌদিপ্রবাসী ক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা টানা তৃতীয় দিনের মতো আজও কারওয়ান বাজার এলাকায় বিক্ষোভ করেন। এর ফলে যান চলাচল ব্যাহত হয়। পরে একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধিদল ইস্কাটনের প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে গিয়ে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদের সঙ্গে দেখা করে।
পরে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘সৌদিপ্রবাসীদের কাছ থেকে আমি আগামী সোমবার পর্যন্ত সময় নিয়েছি। সৌদি আরবে তাদের কর্মস্থলে যাওয়ার ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সমস্যার বিষয়ে অগ্রগতি সম্পর্কে তখন জানাতে পারব।’
ভিসা বা আকামার মেয়াদ বাড়ানোর ক্ষমতা সরকারের নেই বলেও উল্লেখ করেন ইমরান আহমদ। এই সময়ে আন্দোলন না করা এবং সৌদিপ্রবাসীদের কোনো ধরনের রাজনীতি দ্বারা প্রভাবিত না হওয়ারও অনুরোধ করেন মন্ত্রী।
বাংলাদেশের অর্থনীতির সবেচয়ে বড় জোগান আসে প্রবাসীদের কষ্টার্জিত আয় বৈদেশিক রেমিট্যান্স থেকে। সৌদি আরব থেকে ছুটিতে আসা অনেক শ্রমিকই করোনার কারণে ফ্লাইট ও টিকেট জটিলতায় ফিরে যেতে পারছে না। এতে লক্ষাধিক সৌদি প্রবাসীর ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে।
জানা যায়, চলতি মাসের ২৩ ও ২৭ তারিখ ঢাকা থেকে সৌদি আরবে সৌদি এয়ারলাইনসের দুটি ফ্লাইট যাওয়ার কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। ফলে ফের কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার জন্য সৌদি এয়ারলাইনস ও এজেন্সিগুলোর শরণাপন্ন হয় প্রবাসী শ্রমিকরা। কিন্তু গত ২০ সেপ্টেম্বর দুপুরে বাংলাদেশ থেকে সৌদি এয়ারলাইনসের সব ফ্লাইট বাতিল হওয়ার খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে কাজে ফিরে যেতে পারবে কি না, তা নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে ওঠে প্রবাসীরা।
ফ্লাইট চালুর জন্য সৌদি এয়ারলাইনসের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে ভিড় জমায় হাজার হাজার প্রবাসী শ্রমিক।
প্রবাসী শ্রমিকদের দাবি, তাদের আকামার মেয়াদ, ভিসার মেয়াদ শেষ পর্যায়ে। বেশির ভাগই ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যেতে না পারলে সব শেষ হয়ে যাবে। আর ফিরতে পারবে না সৌদিতে। এসব শ্রমিক সৌদি এয়ারলাইনসের ফ্লাইট জটিলতার বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে দুষছে।