সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে আতিকের ইশতেহার ঘোষণা
সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর লেকশোর হোটেলে ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।
ইশতেহার ঘোষণার শুরুতেই আতিকুল ইসলাম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথা স্মরণ করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বিষয় আলোকপাত করেন। এরপর নির্বাচনী ইশতেহারে ঢাকা উত্তর সিটির অগ্রযাত্রার কর্মকাণ্ডের বিষয় তুলে ধরেন আতিকুল। অগ্রযাত্রায় করণীয় হিসেবে বিভিন্ন কাজকে তিন স্তরে ভাগ করেছেন তিনি—সুস্থ ঢাকা, সচল ঢাকা ও আধুনিক ঢাকা।
ইশতেহারে ‘মুজিববর্ষে’র বিষয়টি আলোকপাত করে উল্লেখ করা হয়, ‘পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যমূলক আচরণ এবং নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে এ জাতিকে স্বাধীন-সার্বভৌম সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয় আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ।’
ইশতেহারে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত ভঙ্গুর দেশের দায়িত্ব নিয়ে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের সোনার বাংলার কাঠামো দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছিলেন। শুরু হয়েছিল দেশ বিনির্মাণের অভিযাত্রা। কিন্তু ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। আমাদের প্রগতিশীলতা, উন্নয়ন-অগ্রগতি সবকিছুই স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।’
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সমালোচনা করে মেয়র প্রার্থী আতিকুলের ইশতেহারে বলা হয়, ‘বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনকালে সীমাহীন দুর্নীতি-সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের কারণে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি শুধু স্থবিরই হয়নি, অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছিল। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আবার বাংলাদেশের মানুষ সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে।’
অগ্রগতির মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ উল্লেখ করে ইশতেহারে বলা হয়, ‘১১ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ আজ আলোয় উদ্ভাসিত। উন্নয়ন-অগ্রগতির মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে ইশতেহারে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি) পূরণে এক রোল মডেল। উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রায় অংশ নিতে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশে ও ঢাকা উত্তরের নাগরিকবৃন্দের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সম্মানিত প্রার্থী হিসেবে আমি সিটি করপোরেশন নির্বাচন ২০২০-এ অংশ নিচ্ছি। আমার মতো অন্য মেয়র প্রার্থী, কাউন্সিলর প্রার্থীদের সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আজ সবাই মিলে সবার ঢাকা গড়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে আপনাদের সামনে এসেছি। আমি বিশ্বাস করি, সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করলে সুস্থ ও আধুনিক ঢাকা গড়তে পারব।’
রাজধানী ঢাকাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ বিকশিত হয়েছে উল্লেখ করে ইশতেহারে বলা হয়, ‘৪০০ বছরের পুরোনো শহর ঢাকা; যার বাঁকে বাঁকে ঐতিহ্য-ইতিহাস, সংগ্রাম আর বিনির্মাণের গল্প। মহান মুক্তিযুদ্ধের পর ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী। রাজধানী ঢাকাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ বিকশিত হয়েছে। বিশ্বে জনবহুল শহরের মধ্যে ঢাকা অন্যতম। ঘনবসতিপূর্ণ ও শহরের মানুষের যাপিত জীবনে নানা সীমাবদ্ধতা থাকলেও এ শহর আমাদের কাছে বড় আবেগের, বড় ভালোবাসার।’
ইশতেহার ঘোষণায় ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী আতিকুল বলেন, ‘আপনারা জানেন, ২০২০ সালের ১৭ মার্চ উদযাপিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। এরই মধ্যে এ উপলক্ষে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত সময়কে ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করা হয়েছে। আবার ২০২১ সালের ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বসভায় সমাদৃত। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। সেই উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় ওই মহোৎসব দুটির অপেক্ষায় গোটা বাঙালি জাতি। আমি বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। এরই মধ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ গত ১০ থেকে ১১ বছরে রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির মধ্য দিয়ে এগিয়ে বর্তমানে এসে উপস্থিত হয়েছে। সেই অগ্রযাত্রার দিশারি আমাদের প্রিয় শহর ঢাকা।’
পাড়া ও মহল্লাগুলো একটি শহরের প্রাণ উল্লেখ করে ইশতেহারে বলা করা হয়, ‘শহরের সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে গেলে প্রতিটি এলাকা, পাড়া ও মহল্লাকে আলাদাভাবে নজর দিতে হবে। প্রতিটি এলাকাভিত্তিক সমস্যা শনাক্ত করে সেগুলোর স্থায়ী সমাধানের মধ্য দিয়ে এলাকায় উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করাটা অত্যন্ত জরুরি। এই এলাকাভিত্তিক পরিবর্তনই নগরীর সামগ্রিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। যার ফলে এই নগরীতে বসবাস করা মানুষ সব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।’
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার প্রধান লক্ষ্য, এই নগরীকে কেবল বসবাস উপযোগী নয়, বরং নগরবাসীর জীবনমানেও উন্নয়ন সাধন করা। ঢাকা সিটি করপোরেশন উপনির্বাচন ২০১৯-এ প্রদত্ত নির্বাচনী ইশতেহারের অধিকাংশ কাজই শুরু হয়েছে। আমার গত নয় মাসের অভিজ্ঞতা এবং উপলব্ধিকে কাজে লাগিয়ে আগামীর আকাঙ্ক্ষিত ঢাকা গড়ার লক্ষ্য অর্জনে পেশ করছি আমার ত্রিমুখী ইশতেহার।
সুস্থ ঢাকা
আমাদের এই নগরী কোটি মানুষের আশ্রয়স্থল। এই শহরে বসবাস করা নাগরিকদের সুস্থতা নির্ভর করে এই শহরের সুস্থতার ওপর। একটি সুস্থ ঢাকা নিশ্চিত করতে হলে অতিদ্রুত কিছু পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা জরুরি, যা বাস্তবায়িত হলে ঢাকাবাসী আবারও গর্বের সঙ্গে বলতে পারবেন, ঢাকা পৃথিবীর অন্যতম একটি সুস্থ শহর। ঢাকা গড়ার জন্য আমার প্রস্তাবনাগুলো হচ্ছে :
১। উন্নত বিশ্বের মতো ইন্টেগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট (আইভিএম) পদ্ধতিতে ডিএনসিসি, ডিএসসিসি, ওয়াসা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পার্শ্ববর্তী সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে বছরব্যাপী মশক নিধন কার্যক্রম বাস্তবায়ন।
২। টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমিনবাজারে রিসোর্স রিকভারি ফ্যাসিলিটিস (পিআরএফ) স্থাপনের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে বর্জ্য অপসারণ ও জ্বালানি শক্তিতে রূপান্তর।
৩। তারুণ্যকে অনুপ্রাণিত করতে এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বাড়াতে শহরের সব ওয়ার্ডের নিয়মিত পাড়া উৎসব উদযাপন।
৪। বস্তিবাসীর জন্য নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ।
৫। প্রতিটি এলাকার জলাশয় দখলমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন করে নাগরিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া।
৬। ডিএনসিসির বর্ধিত এলাকায় নারীবান্ধব কম্প্রিহেনসিভ রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ কেয়ার সেন্টার (সিআরএইচসিসি) এবং প্রাইমারি হেলথ কেয়ার (পিএইচসিসি) নির্মাণ।
৭। মিরপুরে ডিএনসিসির নিজস্ব জায়গায় বৃক্ষ অনুরাগীদের জন্য বৃক্ষ ক্লিনিক ও পোষ্য প্রাণী ক্লিনিক নির্মাণ।
৮। সবার জন্য নানা সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন এলাকাভিত্তিক দৃষ্টিনন্দন পার্ক ও আধুনিক খেলার মাঠ নির্মাণ।
৯। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় আধুনিক পশু জবাই কেন্দ্র স্থাপন।
১০। ডিএনসিসির প্রতিটি স্থাপনায় মাতৃদুগ্ধ নির্মাণ।
১১। বিশেষভাবে সক্ষম এবং নারী-পুরুষ-শিশু নির্বিশেষে সবার জন্য পর্যাপ্ত আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ।
১২। ঢাকা উত্তরের উন্নয়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন জায়গায় মিস্ট ব্লোয়ার এবং অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বায়ুদূষণ কমানো।
১৩। ডিএনসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডে নানাবিধ সুবিধাসংবলিত কমপ্লেক্স তৈরি করা।
সচল ঢাকা
ঢাকা শহরের বাসিন্দারা তাদের পাড়া-মহল্লাসহ সব রাস্তাঘাটে চলতে গেলেই নানারকম বাধার সম্মুখীন হন। রাস্তা পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন অনেকেই। প্রতিটি এলাকায় পরিকল্পিত ফুটপাত, ফুটওভারব্রিজ, জেব্রাক্রসিং, সাইকেল ও মোটরসাইকেলের আধুনিক সিগন্যাল না থাকায় নগরবাসীর অবাধ চলাচল ব্যাহত হয়। তাই ঢাকাকে একটি সচল নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে আমি একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করেছি।
১। ফুটপাত দখলমুক্ত করে এলাকাভিত্তিক পথচারীবান্ধব ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের জন্য ফুটপাত নেটওয়ার্ক তৈরি করা।
২। যানজট নিরসনে ডিএমপি, ডিটিসিএ, বিআরটিএ, ডিএসসিসি, পরিবহন মালিক সমিতিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে সম্মিলিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা।
৩। নিরাপদ পথচারী পারাপারের জন্য ঢাকা উত্তরে বিভিন্ন জেব্রাক্রসিংয়ে ডিজিটাল পুশ বাটন সিগন্যাল স্থাপন করা।
৪। আধুনিক নগর পরিবহন ব্যবস্থার জন্য ডিজিটাল ই-টিকেটিং সেবা প্রদানের সময়সূচি পরিবর্তন এবং সুনিয়ন্ত্রিত নারীবান্ধব গণপরিবহন নিশ্চিতকরণ।
৫। স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা প্রবর্তন।
৬। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন নাগরিকদের জন্য গণস্থাপনা এবং গণপরিবহন নিশ্চিতকরণ।
৭। নগরীর ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে বহুতল আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং কমপ্লেক্স নির্মাণ।
৮। হকারদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
৯। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের অসমাপ্ত পরিকল্পনা ঢাকা বাস রুট র্যাশনালাইজেশনের কাজ সরকারের উচ্চপর্যায়ের সবাইকে নিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পন্ন করা।
১০। নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় অনুযায়ী অধিকাংশ স্থানে এস্কেলেটরসহ নতুন ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ।
১১। সাইকেলের জন্য আলাদা লেন (যেখানে সম্ভব) এবং সাইকেল পার্কিং তৈরি করা।
১২। নাগরিকদের যাতায়াত সুবিধার জন্য পরিকল্পিত স্মার্ট বাস স্টপেজ ও বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ।
১৩। প্রতিটি মহল্লার ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন এবং সেন্সরের মাধ্যমে জলাবদ্ধতার স্থান ট্র্যাক করে সমাধান করা।
আধুনিক ঢাকা
উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। উন্নত বিশ্বের রাজধানীগুলোর মতো ঢাকার আধুনিকায়ন না হলে বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে আমরা তাল মিলিয়ে চলতে পারব না। কাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত উন্নয়ন বর্তমান সময়ে শুধু প্রয়োজনীয়ই নয়, অপরিহার্য। ঢাকা আধুনিকায়ন হলে নগরীর সব শ্রেণি ও পেশার মানুষের জীবনযাত্রা বদলে যাবে। স্বপ্নের আধুনিক নির্মাণের জন্য আমার পরিকল্পনা হচ্ছে :
১। ‘সবার ঢাকা’ অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিক সমস্যার অভিযোগ গ্রহণ ও সার্বক্ষণিক তদারকিসহ সব নাগরিক সুবিধার নিশ্চিতকরণ, যেখানে মেয়রের সঙ্গে নাগরিকদের সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকবে।
২। ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স, জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্যান্য নাগরিক সেবা প্রদান।
৩। ব্যবসায়ীদের কোনো প্রকার অসুবিধার সম্মুখীন না করে, ডিএনসিসির মালিকানাধীন কাঁচাবাজার ও মার্কেটগুলোর আধুনিকায়নের জন্য চলছে স্ট্রাকচারাল আপগ্রেডেশেন।
৪। একটি সার্বক্ষণিক ডিজিটাল কমান্ড সেন্টার তৈরি, যার মাধ্যমে শহরের নিরাপত্তা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, স্মার্ট নেইবারহুড পরিচালনা ইত্যাদি সম্পন্ন।
৫। নাগরিকের সার্বিক উন্নয়নে নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতিসহ অন্য বিশেষজ্ঞদের সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ।
৬। সব লেক-খালের সংস্কার, উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসন, মশা নিয়ন্ত্রণ, পাবলিক স্পেস বৃদ্ধি করা, টেকসই পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
৭। বায়ুদূষণ রোধে ইলেকট্রনিক বাস সার্ভিস চালুকরণ।
৮। ব্যবসায়ী সমাজের ভোগান্তি কমাতে ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে তৈরি হবে হেল্প ডেস্ক।
৯। উত্তর ঢাকাকে একটি স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে প্রাথমিকভাবে কয়েকটি এলাকাকে স্মার্ট নেইবারহুড হিসেবে গড়ে তোলা। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি পাড়া-মহল্লাকে এই উদ্যোগের আওতায় আনা।
১০। তারুণ্যকে অনুপ্রাণিত করতে প্রতিটি এলাকায় সংস্কৃতি ও সেবাকেন্দ্র গঠন, যেখানে থাকবে হেল্প ডেস্ক, ট্রেনিং সেন্টার, স্টার্টআপ কো-ওয়ার্কিং স্পেস, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও অন্যান্য সুবিধা।
১১। প্রতিটি এলাকার কমিউনিটি সেন্টারগুলোর আধুনিকায়ন ও বহুমুখী ব্যবহার (আর্ট ক্লাস, গানের ক্লাস, ইয়োগা, আত্মরক্ষা প্রশিক্ষণ) নিশ্চিতকরণ।
১২। জবাবদিহি নিশ্চিত করতে জনতার মুখোমুখি মেয়র শীর্ষক নিয়মিত মতবিনিময়ের মাধ্যমে ওয়ার্ডভিত্তিক সমস্যার সমাধান।