সিরাজগঞ্জে আবারও শৈত্যপ্রবাহ, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতের দাপট
সিরাজগঞ্জে আবারও শুরু হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। এতে উত্তরের প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জ জেলায় পাল্লা দিয়েছে বাড়ছে শীতের দাপট। ফলে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে জেলার খেটে খাওয়া ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষ। ঘন কুয়াশায় ঢাকা রয়েছে জেলা শহর। প্রচণ্ড শীতে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যহত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে যমুনার চরাঞ্চলের মানুষ।
শীত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না গবাদি পশু। শীত থেকে রক্ষা পেতে গবাদি পশুর গায়ে মুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে চটের বস্তা। হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে শিশুরা নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, শ্বাসনালী, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে।
প্রতিদিনই শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ডায়রিয়া ওয়ার্ড ও শিশু ওয়ার্ডে বেডের বিপরীতে রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় হাসপাতালের মেঝেতে বিছানা বিছিয়ে রোগীদের সেবা দিচ্ছেন চিকিৎসক ও সেবিকারা।
ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে সকালেও হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।
স্থানীয় আবদুল জলিল বলেন, ‘গত তিন হলো প্রচণ্ড শীত। কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখা নেই। ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। জরুরি কাজের জন্য বাধ্য হয়ে ঘর থেকে বের হয়েছি। ঘর থেকে বের হলে মানুষ ঠাণ্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়ছে।’
রিকশাচালক আজাদ হোসেন বলেন, ‘শীতের কারণে রাস্তায় বের হতে পারছি না। জরুরি কাজ ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হয় না। ঠাণ্ডার কারণে রিকশায় উঠতে চায় না। আগে প্রতিদিন সাত থেকে আটশত টাকা আয় হতো এখন দুইশ থেকে তিনশ টাকা হয়। সংসারের সাতজন মানুষ খুব কষ্টে আছি।’
সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. রুবাইয়া নাহার বলেন, ‘যে পরিমাণ শিশু রোগী স্বাভাবিক দিনে হাসপাতালে ভর্তি হয় বর্তমানে ঠাণ্ডার প্রকোপ অনেক বেশি বেড়ে যাওয়ায় দ্বিগুণ রোগী ভর্তি হচ্ছে। এতে বেশি পরিমাণ রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে আমরা হিমশিম খেয়ে যাচ্ছি। হাসপাতালে যে পরিমাণ লোকবল থাকার কথা তার চেয়ে কম আছে। তারপরও আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, শ্বাসনালী, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ডায়রিয়ার প্রকোপ অনেক বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় যেটি করণীয় তা হলো ছোট বাচ্চাদের ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা করতে গরম কাপড় ব্যবহার ও গরম খাবার খাওয়ানো। দুপুর ১২টার মধ্যে গরম পানি দিয়ে গোসল করা।’
সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আবদুর রহিম বলেন, ‘শীতের জন্য আমাদের অনেক আগে থেকে প্রস্তুতি ছিল। জেলার নয়টি উপজেলার শীতার্তদের মধ্যে ৫৫ হাজার ৯০০ পিস কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারী উদ্যোগেও কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে।’