সিনহা রাশেদ নিহতের ঘটনায় বিভ্রান্তিকর তথ্য না দেওয়ার আহ্বান র্যাবের
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহতের ঘটনাকেন্দ্রিক বিভ্রান্তিকর তথ্য ছাড়ানো থেকে বিরত থাকার জন্য র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
এ সময় আরো জানানো হয়, সিনহা রাশেদ হত্যা মামলার সাক্ষী হিসেবে সিফাত ও শিপ্রা দেবনাথকে শিগগির জিজ্ঞাসাবাদ করবেন র্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা। এ ছাড়া সিনহা নিহতের ঘটনায় পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষী ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ।
গত ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাতে কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ রোডে টেকনাফের বাহারছড়া চেকপোস্টে তল্লাশির সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ। তাঁর সঙ্গে কক্সবাজারে প্রামাণ্যচিত্র তৈরির কাজ করছিলেন স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির তিন শিক্ষার্থী— শিপ্রা দেবনাথ, সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও তাহসিন রিফাত নূর।
পুলিশ সাহেদুল ইসলাম সিফাতের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় মাদক দ্রব্য ও হত্যা মামলা এবং কক্সবাজারের রামু থানায় শিপ্রার বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য আইনে মামলা করে। পরে তাঁরা জামিনে মুক্তি পান। এ ছাড়া তাহসিন রিফাত নূরকে অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইং এর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘র্যাবের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন এই মামলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী সিফাত ও শিপ্রা দেবনাথ। আমরা তাদের খুব শিগগির জিজ্ঞাসাবাদ করব।
‘এরপর মূলত পর্যায়ক্রমিকভাবে… গতকাল যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদেরকে আগামীকাল জিজ্ঞাসাবাদ করব। এরপর বাকি যে সাতজন আসামি আছেন (পুলিশের) বরখাস্তকৃত সদস্য তাদেরকে পর্যায়ক্রমে পরিকল্পনামাফিক তদন্তকারী কর্মকর্তা জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।’
এ সময় লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ আরো বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে এই ঘটনাকেন্দ্রিক বিভ্রান্তকর তথ্য প্রচারিত হচ্ছে। র্যাব সকলকে অনুরোধ করে, যেকোনো তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে উপস্থাপনের আগে তার বস্তুনিষ্ঠতা নিরপেক্ষতা যাচাই সাপেক্ষে উপস্থাপন করার জন্য।’
গত ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরিদর্শক লিয়াকত আলী, ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। এদের মধ্যে সাতজন আদালতে আত্মসমর্পনের পর কারাগারে রয়েছেন। তাদের সবাইকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা র্যাব।
এ দিকে এ ঘটনায় টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা দুটি মামলার তিন সাক্ষীকেও গতকাল গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ তাদেরকেও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত।