সিএমএমে আরো ৭ ভার্চুয়াল আদালত, জামিনের আবেদন বাড়ছে
করোনাভাইরাসের কারণে দেশব্যাপী চলছে সাধারণ ছুটি। আর এ ছুটিতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে বাড়ানো হলো আরো সাতটি ভার্চুয়াল আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুলফিকার হায়াত আরো সাতটি ভার্চুয়াল আদালত গঠন করে আদেশ জারি করেছেন। এর আগে গত ১১ মে ঢাকার সিএমএম জুলফিকার হায়াত চারটি ভার্চুয়াল আদালত গঠন করে আদেশ জারি করেন। পরবর্তীতে সে সব আদালতে জামিনের আবেদন বাড়তে থাকায় নতুন করে আরো সাতটি আদালত বাড়ানো হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
নতুন আদেশে ১১টি ভার্চুয়াল আদালতে ১১ জন বিচারক ঢাকার বিভিন্ন থানার কারাগারে থাকা আসামিদের জামিনের আবেদন শুনবেন।
ভার্চুয়াল আদালত-১
এ আদালতে বিচারক হিসেবে থাকবেন ঢাকার মেট্রোপলিন ম্যাজিস্ট্রেট সরাফুজ্জামান আনছারী। তিনি গুলশান, বনানী, বাড্ডা, ভাটারা, খিলক্ষেত, ক্যান্টনমেন্ট থানার মামলার শুনানি শুনবেন।
ভার্চুয়াল আদালত-২
এ আদালতে বিচারক হিসেবে থাকবেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী। তিনি রমনা, শাহবাগ, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, কোতয়ালী, বংশাল থানার হাজতি আসামিদের জামিন আবেদন শুনবেন।
ভার্চুয়াল আদালত-৩
এ আদালতে বিচারক হিসেবে থাকবেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারী। তিনি মতিঝিল, শাহজাহানপুর, পল্টন, কদমতলী, শ্যামপুর, সূত্রাপুর, গেন্ডারিয়া ও ওয়ারী থানার হাজতি আসামিদের জামিনের আবেদন শুনবেন।
ভার্চুয়াল আদালত-৪
এ আদালতের বিচারক হিসেবে থাকবেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী। তিনি মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানার হাজতি আসামিদের জামিনের আবেদন শুনবেন।
ভার্চুয়াল আদালত-৫
এ আদালতের বিচারক হিসেবে থাকবেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া। তিনি উত্তরা পূর্ব, উত্তরা পশ্চিম, তুরাগ, বিমানবন্দর, উত্তরখান ও দক্ষিণখান থানার হাজতি আসামিদের জামিনের আবেদন শুনবেন।
ভার্চুয়াল আদালত-৬
এ আদালতের বিচারক হিসেবে থাকবেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম। তিনি খিলগাঁও, মুগদা, কাফরুল ও ভাষানটেক থানার হাজতি আসামিদের জামিনের আবেদন শুনবেন।
ভার্চুয়াল আদালত-৭
এ আদালতের বিচারক হিসেবে থাকবেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদ। তিনি নিউমার্কেট, কলাবাগান, লালবাগ, চকবাজার, কামরাঙ্গীচর, পল্লবী, রূপনগর থানার হাজতি আসামিদের জামিনের আবেদন শুনবেন।
ভার্চুয়াল আদালত-৮
এ আদালতের বিচারক হিসেবে থাকবেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঈনুল ইসলাম। তিনি তেজগাঁও, তেজগাঁও শিল্প অঞ্চল ও হাতিরঝিল থানার হাজতি আসামিদের জামিনের আবেদন শুনবেন।
ভার্চুয়াল আদালত-৯
এ আদালতের বিচারক হিসেবে থাকবেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমাম। তিনি ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, সবুজবাগ ও রামপুরা থানার হাজতি আসামিদের জামিনের আবেদন শুনবেন।
ভার্চুয়াল আদালত-১০
এ আদালতের বিচারক হিসেবে থাকবেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহ। তিনি শাহআলী, দারুসসালাম, মিরপুর ও শেরেবাংলানগর থানার হাজতি আসামিদের জামিনের আবেদন শুনবেন।
ভার্চুয়াল আদালত-১১
এ আদালতের বিচারক হিসেবে থাকবেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ধীমান চন্দ্র মণ্ডল। তিনি কাফরুল, ভাষানটেক, পল্লবী ও রূপনগর থানার হাজতি আসামিদের জামিনের আবেদন শুনবেন।
এ ছাড়া ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুটি ভার্চুয়াল আদালত গঠন করা হয়েছে।
ভার্চুয়াল-১ এর বিচারক হিসেবে থাকবেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান সিকদার। তিনি সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই, জিআরপি, দ্রুত বিচার মামলায় কারাগারে থাকা আসামিদের জামিন আবেদন শুনবেন।
অপরদিকে ভার্চুয়াল-২ নম্বর আদালতে থাকবেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রাজীব হাসান। তিনি
কেরাণীগঞ্জ, দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ, দোহার, নবাবগঞ্জ, মোটরযান ও নন জিআর মামলার কারাগারে থাকা আসামিদের জামিন আবেদন শুনবেন।
এদিকে আজ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২০০ জনেরর বেশি কারাগারে থাকা আসামির জামিনের আবেদন ভার্চুয়াল আদালতে শুনানি হয়েছে। এর মধ্যে ভার্চুয়াল ৪ নম্বর আদালতের বিচারক রাজেশ চৌধুরীর আদালতে ৩৫ জনের জামিন শুনানি শেষে ২০ জনের জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে।
অভ্যস্থ হচ্ছেন আইনজীবীরা
ভার্চুয়াল আদালত নিয়ে অনেক আইনজীবী অসন্তোষ প্রকাশ করলেও জামিন পাওয়া সহজ হওয়ায় আবার অনেকে সন্তোষও প্রকাশ করেছেন।
ঢাকা বারের আইনজীবী কামরুজ্জামান সুমন বলেন, করোনার কারণে দেশে আদালতসহ সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। এর মধ্যে অনেক আসামি কারাগারে আটক আছেন। তারা আদালত বন্ধ থাকার কারণে জামিন পেতে পারছেন না।। কিন্তু ভার্চুয়াল আদালত গঠনের পরে অনেক আইনজীবী আসামিদের জামিনের আবেদন করতে পারছেন ও জামিন করাচ্ছেন। তিনি বলেন, একদিক দিয়ে আসামিরা সহজে জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন, অন্যদিকে আদালতে আইনজীবীদের আসতে হচ্ছে না। ফলে তাঁরা করোনার আশঙ্কা থেকে মুক্ত থাকছেন।
আইনজীবী হান্নান ভূঁইয়া বলেন, ‘ইয়াবা রাখার মামলায় আমার আসামি কারাগারে আটক ছিলেন। আদালত বন্ধ থাকায় সঠিক সময়ে জামিনের আবেদন করতে পারিনি। গতকাল অনলাইনে আবেদনের পরে আজ আদালত থেকে ভার্চুয়ালি জামিন করিয়েছি।। এখন খুব সহজ প্রক্রিয়া লাগছে,। এতে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা বেশ উপকৃত হবেন।