সিংগাইরে তাবলিগ জামাতের তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় তাবলিগ জামাতের ১১ জন মুসল্লির নমুনা পরীক্ষায় তিনজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। আক্রান্ত ওই তিনজনকে সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশনে রাখার প্রস্তুতি চলছে। মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আনোয়ারুল আমিন জানান, গত ২৪ মার্চ ফরিদপুর থেকে মানিকগঞ্জের সিংগাইরের বাইতুল মামুর ও মারকাযুল মা আরিফ ওয়াদ-দা ওয়াহ মাদ্রাসায় তাবলিগ জামাতের ১২ সদস্যের একটি দল এসেছিল। তাঁদের মধ্যে গত শনিবার আবদুল বাকী নামের ৬০ বছরের এক বৃদ্ধের শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দিলে তাঁকে ঢাকায় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পরীক্ষা করালে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। এরপর গত রোববার ওই মাদ্রাসাসহ পুরো সিংগাইর পৌর এলাকাকে লকডাউন ঘোষণা করে প্রশাসন। সেই সঙ্গে তাবলিগ জামাতের ১১ সদস্যকে ওই মাদ্রাসাতেই হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। একই সঙ্গে জামাতে যোগ দেওয়া স্থানীয় ছয়জনকে এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়।
সিভিল সার্জন আরো জানান, শনাক্ত তিন ব্যক্তি ফরিদপুর জেলার বাসিন্দা। তাঁদের সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে আজ সকালে সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের সাকরাইল গ্রামে তাবলিগ জামাত সম্পন্ন করা দুজন মুসল্লিকে করোনাভাইরাস সতর্কতায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। কোয়ারেন্টিনে নেওয়া মুসল্লিরা আজ ভোরে ঢাকার ধামরাইয়ের কুল্লা জামে মসজিদ থেকে তাবলিগ জামাত শেষে মানিকগঞ্জ সদরের সাকরাইল গ্রামে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন।
গড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আফসার উদ্দীন সরকার বলেন, ‘আজ সকালে ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্যের বরাতে জানতে পারি, একই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা চার মাস তাবলিগ জামাতের চিল্লা শেষে ভোরে নিজ বাড়িতে ফিরে এসেছেন। তাঁর সঙ্গে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার একজন সফরসঙ্গীও রয়েছেন। খবরটি শোনামাত্র কোনো প্রকার কালক্ষেপণ না করে সঙ্গে সঙ্গে সদর থানায় জানাই এবং তারা দ্রুত এলাকা থেকে তাঁদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাই।’
চেয়ারম্যান আরো জানান, ওই মুসল্লির পরিবারের চার সদস্যকেও হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় যে মসজিদটিতে তিনি নামাজ পড়েছেন, তা আপাতত পরিষ্কারের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
সদর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মন্টু চন্দ্র পাল জানান, প্রাথমিকভাবে তাবলিগ জামাতফেরত দুই মুসল্লিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধকে প্রাধান্য দিয়ে মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক জনসংখ্যা ইনস্টিটিউটে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হচ্ছে। এ ছাড়াও তারা যে বাড়িতে উঠেছিলেন, সেই বাড়িটির বাকি চার সদস্যকেও ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য বিভাগ তাঁদের পর্যবেক্ষণ করছেন বলেও জানান তিনি।