সাত দিনের কঠোর লকডাউনে গোপালগঞ্জের ২ ইউনিয়ন
গোপালগঞ্জে অধিক হারে কারোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় সদর উপজেলার সাতপাড় ও বৌলতলী ইউনিয়নে সাত দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগ মাঠে নেমে ওই দুই ইউনিয়নে লকডাউন কার্যকর করে। এ সময় গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলামসহ স্বাস্থ্য বিভাগের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাতে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাশেদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, ওষুধ ও কৃষিপণ্যের দোকান। এসব দোকান সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। কঠোর লকডাউনে অন্যান্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ও এনজিওর কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ব্যাংক ও এনজিওকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
ইউএনও আরও জানান, বৌলতলী ইউনিয়নের তেলিভিটা গ্রামের হলধর কীর্ত্তনীয়ার ছেলে নিভাষ বিশ্বাস করোনার উপসর্গ নিয়ে সাত দিন আগে মৃত্যুবরণ করেন। পরে ওই পরিবারের আরও তিনজন করোনায় আক্রান্ত হন। নিভাষের সংস্পর্শে আশা ওই গ্রামের ১৬৮ জনের নমুনা দুই দফা সংগ্রহ করে ৪১ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এ ছাড়া বৌলতলী ও সাতপাড় ইউনিয়ন হিন্দু অধ্যুষিত। এ সব এলাকার মানুষ বৈধ ও অবৈধ পথে ভারত যাতায়াত করে থাকেন। তাই আক্রান্তদের মধ্যে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট থাকতে পারে। তাই সংক্রমণ যাতে বাড়তে না পারে সে জন্য সাতপাড় ও বৌলতলী ইউনিয়নের সব হাটবাজার লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ওই এলাকার মানুষের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষা অব্যাহত রাখা হবে। এ ছাড়া গণপরিবহণ চলাচল সীমিত করা হবে। অতিপ্রয়োজন ছাড়া সাধারণ মানুষকে ঘরের বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। লকডাউন চলাকালে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে সরকারি খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে।
গোপালগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. সাকিবুর রহমান জানান, এ পর্যন্ত গোপালগঞ্জে করোনায় তিন হাজার ৭৯১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৯ জন। গত মার্চে গোপালগঞ্জে করোনা আক্রান্তের হার ছিল ৪.৫ শতাংশ। মে মাসে আক্রান্তের হার ১৪.৫০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলার তেলিভিটা গ্রামে দুই দফা পরীক্ষায় ২৫ শতাংশ করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এটি নিয়ন্ত্রণে লকডাউনসহ প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ জেলা প্রশাসন ও পুলিশের সহযোগিতায় স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে।