সাতকানিয়ায় মৃত বৃদ্ধের করোনা ছিল, পুরো গ্রাম ও হাসপাতাল লকডাউন
দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার এক বৃদ্ধ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে চট্টগ্রাম মেডিকেলে তাঁর মৃত্যু হওয়ার পর নমুনা সংগ্রহে পরীক্ষা করলে গতকাল শনিবার বিকেলে তাঁর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মুত্যৃর তথ্য আসে। এরই মধ্যে গত শুক্রবার সকালে স্বাভাবিকভাবেই তাঁর দাফন হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ছেলে আমিনুল ইসলাম।
এদিকে করোনা পজিটিভ আসার পর কাজ শুরু করে শনিবার গভীর রাতে মৃতের ঘরসহ তাঁর লাশ দাফনে থাকা সংশ্লিষ্টদের বসত ঘর ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসহ একটি গ্রামের ৩৪২ বাড়ি, পৌরসভার সাত পরিবারসহ মোট ৩৮৭ পরিবারের বসতঘর লকডাউন করে দেয় সাতকানিয়া উপজেলা প্রশাসন।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অফিসার নুর-এ আলম ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আব্দুল মজিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী লোহাগাড়া সিটি হাসপাতালে ওই রোগী চিকিত্সা নেওয়ার সংবাদে ওই হাসপাতাল ও মৃত ব্যাক্তির দোকানের কর্মীর লোহাগাড়ার পদুয়াস্থ বাড়িও লকডাউন করে দেন লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌছিফ আহমেদ।
বৃদ্ধের ছেলে আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাবা বুধবার শ্বাসকষ্টজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে চট্টগ্রাম জেনারেল হসপিটালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসকরা ভর্তি না নিয়ে বাড়িতে নেওয়ার পরামর্শ দেন। বাড়িতে আনার পর বৃহস্পতিবার অবস্থা বেশি খারাপ হলে আনুমানিক রাত ১০টায় প্রথমে কেরানীহাটে আশ-শেফা হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার বাবাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন। সেখানে জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর ইসিজি করে করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এরপর চিকিৎসকরা আমাদের কাছ থেকে আবার বাবার রোগের বিবরণ শুনে আমার বাবার করোনা সন্দেহ হলে তাঁরা নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠান। আমরা বাবাকে গ্রামে এনে শুক্রবার সকাল ১০টার সময় স্বাভাবিকভাবে জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করি। এরই মধ্যে শনিবার বিকেলে জানতে পারলাম আমার বাবা করোনা আক্রান্ত ছিলেন।’
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-এ আলম বলেন, ‘মৃত বৃদ্ধের বাড়িসহ পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের পুরো ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ৩৪২ পরিবার, মাদার্সা ইউনিয়নের রূপনগর ২ নম্বর ওয়ার্ডের ১২ পরিবাররে ৫০ জন, একই ইউনিয়নের মক্কাবাড়ী ১ নম্বর ওয়ার্ডের ১০ পরিবারের ৪০ জন,
সাতকানিয়া পৌরসভার বোয়ালিয়াপাড়ার সাত পরিবারের ৩১ জন, সামিয়ারপাড়ার এক পরিবারের ৯ জন, ছিটুয়াপাড়ার ১৫ পরিবারের ৭৬ জনকে লকডাউনে থাকতে বলা হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ৩৮৭ পরিবার লকডাউনে আছে।’