বিএনপিকে আগামী নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘জনগণ যাদের নির্বাচিত করবে, তারাই পরবর্তী সরকার গঠন করবে। বিএনপি একটি ব্যর্থ বিরোধীদল। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থতা এবং নেতৃত্বের হঠকারিতায় কর্মীরা আজ হতাশাগ্রস্ত। এক যুগ ধরে প্রাণান্ত চেষ্টা করেও কর্মীদের মাঠে নামাতে পারেনি বিএনপি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকার পরিবর্তনের একমাত্র পথ নির্বাচন।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার ওবায়দুল কাদের তাঁর সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন।

এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় আপসহীন মনোভাব নিয়েই জাতীয় রাজনীতিতে শেখ হাসিনার যাত্রা শুরু হয় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জনগণের মুক্তির আন্দোলনে শেখ হাসিনাকে সহ্য করতে হয়েছে অনেক জেল-জুলুম ও অত্যাচার-নির্যাতন। শেখ হাসিনা অসংখ্যবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন, কিন্তু জনগণের অকৃত্রিম ভালোবাসায় সব রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে দেশকে এগিয়ে নিতে অকুতোভয় নির্ভীক সেনানীর মতো নিরবচ্ছিন্নভাবে পথ চলেছেন।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সব বাধা-বিপত্তি জয় করে আজ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বমহিমায় উজ্জ্বল। শেখ হাসিনা তাঁর যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশকে বিশ্বসভায় বিশেষ মর্যাদায় উন্নীত করেছেন।’

গণতন্ত্র চাওয়ার প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বিএনপির নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘নিজেরা গণতান্ত্রিক হোন এবং রাজনীতিতে ও দলের গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন। গণতন্ত্র শুধু চাওয়ার বিষয় নয়, এটি চর্চারও বিষয়। সরকার পরিবর্তনের একমাত্র পথ নির্বাচন।’

সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ক্ষমতায় যেতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা দলের কর্মীদের যুদ্ধের জন্য ডাক দিয়েছেন। তাঁদের এমন বক্তব্য একদিকে অগণতান্ত্রিক, অপরদিকে ফ্যাসিবাদী মানসিকতার পরিচয়। যুদ্ধের জন্য কর্মীদের ডাক দেওয়ার মধ্য দিয়ে তাঁরা আবারও আগুন সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির আভাস দিচ্ছেন কি না, তা এখন ভেবে দেখার বিষয়।’

‘যদি তাই হয় তাহলে এই আগুন সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে জবাব দিতে জনগণ প্রস্তুত রয়েছে। বিএনপির মহাসচিব মাথাপিছু ঋণের বোঝা দেখেন, রাষ্ট্রের উত্তরণ ও সমৃদ্ধির কিছু দেখতে পান না। তাঁরা দেশের অর্থনীতিকে পরনির্ভরশীল করে রেখে গিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই দুর্নামের বৃত্ত থেকে দেশকে অমিত সম্ভাবনাময় রূপ দিয়েছেন, পরিচিত করেছেন উন্নয়ন ও অর্জনের রোলমডেল হিসেবে,’ যোগ করেন ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘সরকারের অর্জনে ক্রমেই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে বিএনপি। তাই বিএনপির মহাসচিব শুধু ঋণই দেখতে পান, কিন্তু মাথাপিছু আয় দুই হাজার ২২৭ ডলার দেখতে পান না। দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দেখতে পায় না বিএনপি।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের মুখে সবসময় মিথ্যাচার আর নেতিবাচকতা মানায় না। তাদের বক্তব্যে গভীর হতাশা ও দলীয় ব্যর্থতাই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বিএনপি দেশের কপালে পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের কলঙ্কতিলক পরিয়েছিল।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সরকার হটানোর নামে যে যুদ্ধংদেহী মনোভাব বিএনপি দেখাচ্ছে, সে ক্ষেত্রে জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় সরকার কঠোরভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে।’