‘সংঘাতের উসকানি দিলে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে’
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির নামে সংঘাতের উসকানি দিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সমুচিত জবাব দেবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত দলের বর্ধিত সভায় এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কালকে আদালতে রায় হবে, একটু আগে খবর পেলাম হাইকোর্টের কাছে একটি মোটর সাইকেলে আগুন দিয়েছে। তারা আদালতকে ভয় দেখাচ্ছে। আবারও অগ্নি সন্ত্রাসের হুমকি দিচ্ছে। আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আজকে বেগম জিয়ার মুক্তিকে কেন্দ্র করে তারা আন্দোলনের নামে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে, আওয়ামী লীগ কিন্তু এখন ঐক্যবদ্ধ সুসংগঠিত একটা সংগঠন, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মত সক্ষমতা আওয়ামী লীগের আছে। এটা পঁচাত্তর সাল নয়, এটা ২০০৪ সালও নয়। চক্রান্তের জবাব দিতে আওয়ামী লীগ প্রস্তুত।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘রাজনীতি রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করব, কিন্তু অরাজনৈতিকভাবে সহিংসতার দিকে গেলে, সংঘাতের উসকানি দিলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সমুচিত জবাব দেবে।’
এ সময় দলীয় নেতাকর্মীদের বৃহস্পতিবারের রায়ের আগে পরে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনারা সতর্ক থাকবেন, গায়ে পড়ে আক্রমণ করবেন না। আক্রান্ত হলে কি আমরা ছেড়ে দেব? আক্রমণ করবেন না, আক্রান্ত হলে কী করতে হবে নির্দেশ আমরা দেব। নির্দেশের বাইরে আমরা কিছু করব না। আমরা ক্ষমতাসীন পার্টি। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। ঠান্ডা মাথায় মোকাবিলা করতে হবে। আমরা এমন কোন কাজ করব না, যাতে পাবলিক আমাদের ভুল বোঝে। জনগনের কাছে যেটা গ্রহণ যোগ্য সেটাই আমরা করব।’
কারাবন্দি খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রতিবেদন নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সন্দেহ বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতির প্রকাশ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সন্দেহ থাকলে আদালতকে বলুন।’ তিনি বলেন, ‘বিএসএমএমইউ থেকে সুপ্রিম কোর্টে দেওয়া স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রতিবেদন ভিত্তিতেই বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিন আবেদনের বিষয়ে আদালতের আদেশ হবে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মেডিকেল বোর্ড হয়েছে, মেডিকেল বোর্ডে তাদেরও পছন্দের ডাক্তার রয়েছে। মেডিকেল বোর্ড বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে রিপোর্ট দিয়েছেন। মির্জা ফখরুল বলছেন, এই রিপোর্টে তাদের সন্দেহ আছে। সব কিছুতেই তাদের সন্দেহ। দেশের সর্বোচ্চ আদালতে গিয়ে বলুন যে, এই রিপোর্টে আপনাদের সন্দেহ রয়েছে। এই নালিশ কার কাছে দিচ্ছেন? আদালতকে বলুন, আপনাদের আইনজীবীরা বলুক এই রিপোর্ট সন্দেহ জনক। আদালতই সেটা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখবে। প্রত্যেকটা বিষয়ে তারা তাদের নেতিবাচক রাজনীতির বহি:প্রকাশ ঘটাচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আগামী দিনগুলো খুব চ্যালেঞ্জিং, কারণ আমাদের যারা প্রতিপক্ষ, তারা সহজে ছেড়ে দেবে না। আন্দোলন, নির্বাচনে তাদের ব্যর্থতা দগদগে। ক্ষমতার জন্য এখন চোরাই পথে চক্রান্তের পন্থা বেছে নিয়েছে। তারা আইন মানে না, আদালত মানে না, বিচার মানে না। বেগম খালেদা জিয়ার জামিনকে কেন্দ্র করে বিচার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে, আদালতের বিরুদ্ধেও তারা অঘোষিত যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। সর্বোচ্চ আদালতকেও তারা হুমকি দিচ্ছে। আদালত প্রাঙ্গনকেও তারা রনাঙ্গন করেছে। সেদিনও আদালতের ভেতরে প্রধান বিচারপতির সামনে তারা হট্টগোল করেছে। আইনের প্রতি তাদের এত অশ্রদ্ধা।’
‘বন্দুক উচিয়ে ক্ষমতা দখলের দিন শেষ’
গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ড. কামাল হোসেনকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তাঁর বক্তব্য আমরা দেখেও না দেখার ভান ধরি। প্রবীণ মানুষ। আমরা তাঁকে সম্মান করি। রাজনীতিতে জনগনের কাছে তাঁর অবস্থানটা কী এটা তাঁর একটু ভেবে দেখা উচিৎ। তাঁর কাছ থেকে আমরা অশালীন অমার্জিত বক্তব্য আশা করি না। যদি তাঁর সে ধরণের সাহস থাকতো, তিনি নির্বাচনে অংশ নিতেন। নির্বাচন না করে আজকে তাঁর ফ্রন্টের ব্যর্থতার পরাজয়ের পর আবোল তাবোল বকতে শুরু করেছেন। এই সরকার জনগনের সরকার, জনগন চাইবে আমরা বিদায় নিব। জনগন কাকে চায় এটা দেখার জন্য আরেকটা নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ক্ষমতার পরিবর্তন নিয়ে, যে যেটাই ভাবুন, যতই স্বপ্ন দেখুন, অন্য কোনোভাবে হবে না। ক্ষমতার পরিবর্তন আরেকটা নির্বাচন ছাড়া সম্ভব না। বাংলাদেশে বন্দুক উঁচিয়ে ক্ষমতা দখলের দিন শেষ। সে অবস্থা আর দেশে ফিরে আসবে না।’