বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘শ্রমিক সংগঠন ও নেতৃবৃন্দকে শিক্ষিত ও দায়িত্বশীল হতে হবে। তাদের শ্রমিকদের স্বার্থ এবং মালিকের স্বার্থ দুটোই দেখতে হবে। প্রতিষ্ঠান বেঁচে না থাকলে শ্রমিক মালিক কেউ বাঁচবে না। সবাইকে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে কাজ করতে হবে। শ্রমিক সংগঠন শ্রমিকদের স্বার্থেই হওয়া প্রয়োজন। শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিক সংগঠন হবে, এটাই স্বাভাবিক। আমি আশা করব, উভয় পক্ষই দায়িত্বশীল হবেন। সরকার শ্রমিক ও মালিকদের প্রয়োজনীয় সবধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।’

বাণিজ্যমন্ত্রী আজ শুক্রবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিডিয়া কমপ্লেক্স মিলনায়তনে ‘জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের ১৬তম দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘শ্রমিক ও মালিকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় আজ তৈরি পোশাক খাত বর্তমান অবস্থানে এসেছে। এজন্যে উভয়ের স্বার্থ নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি পণ্যের উপযুক্ত মূল্যও নিশ্চিত হওয়া দরকার। প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখতে এ দুটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

মন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বেড়েছে, বাংলাদেশেও বেড়েছে। শ্রমিকদের কষ্ট হচ্ছে, তাদের মজুরি বৃদ্ধির দাবি যৌক্তিক। এজন্য মজুরি কমিশন গঠন করে শ্রমিকদের জীবনযাত্রার ব্যয়, পণ্যের মূল্য, উৎপাদন ব্যয়-এই সার্বিক দিকগুলো  নিয়ে একটি গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। যেটা যৌক্তিক মজুরি সেটাই নির্ধারণ হওয়া প্রয়োজন।’

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির শক্ত ভিত্তির জন্য শ্রমিকদের অবদান অনেক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশের এক কোটি পরিবারকে সাশ্রয়ী মূল্যে তেল, ডাল, চিনিসহ কয়েকটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য টিসিবি’র মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছে। এর সঙ্গে চাউলকেও যুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। এতে দেশের প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। এ তালিকায় তৈরি পোশাক খাতকে একটি লেভেল পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে। তা সম্ভব হলে আমি খুবই খুশি হব।’

জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিনের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধক ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত  সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শামসুন নাহার এবং বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট জোবেদা পারভীন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।