শ্রমিকনেতা নুরুল হত্যা : তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার নির্দেশ
এজাহার পরিবর্তনের অভিযোগে রাজশাহীর পুঠিয়ার শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক শামীম আক্তারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাঁর দেওয়া অভিযোগপত্র বাতিল করে পুনরায় তদন্ত করতে পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. সেলিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান।
২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর রাজশাহীর পুঠিয়ার শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
মামলার যাবতীয় নথি পিবিআই-এর কাছে হস্তান্তর করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তকালে আবেদনকারীর মূল এজাহার, রাজশাহীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের তদন্ত প্রতিবেদন ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য বিবেচনা করতে বলা হয়েছে।
এ তদন্ত কার্যক্রম তদারকি করতে পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে পিবিআই-এর পরিদর্শক শামীম আক্তারকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁর দেওয়া অভিযোগপত্রে সন্তুষ্ট হতে পারেননি আদালত।
পুঠিয়া সড়ক পরিবহণ মটর শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচন নিয়ে বিরোধের জের ধরে খুন হন শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম।
২০১৯ সালের ১১ জুন সকালে পুঠিয়ার কাঁঠালবাড়িয়া এলাকার ‘এসএস ব্রিক ফিল্ড’ নামক ইটভাটা থেকে নুরুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে নিগার সুলতানা থানায় এজাহার দাখিল করেন। কিন্তু, এজাহার গ্রহণ না করে তাঁর কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এরপর কয়েকদিন থানা থেকে কোনো তৎপরতা না দেখে নিহতের স্ত্রী সাজেদা বেগম পুঠিয়া উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশী মামলা করেন।
এ মামলায় শুনানিকালে পুঠিয়া থানা থেকে নিগার সুলতানার স্বাক্ষর করা একটি এজাহার হাজির করে থানা পুলিশ। তাতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি দেখানো হয়। ওই এজাহারে সন্দেহভাজন হিসেবে পাঁচ জনের নাম বলা হয়। এজাহারের বিষয়ে তখনই নিগার সুলতানা ও তাঁর মা সাজেদা বেগম আপত্তি জানিয়ে বলেন, ‘এই এজাহার তাঁদের নয়। পরবর্তী সময়ে নিহত নুরুল ইসলামের পরিবারের পক্ষ থেকে ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই আইজি, রাজশাহী রেঞ্জের পুলিশের ডিআইজি ও রাজশাহীর এসপির কাছে এজাহার বদলে ফেলার অভিযোগ দাখিল করা হয়। কিন্তু, পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি। এ অবস্থায় হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। এ রিট আবেদনে হাইকোর্ট রুল জারি করেন এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের নির্দেশে অভিযোগ তদন্ত করে ওসি সাকিলসহ পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন রাজশাহীর মুখ্য মহানগর হাকিম মো. মেহেদী হাসান তালুকদার।
প্রতিবেদনটি ওই বছরের ৬ নভেম্বর হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পরে শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।