শ্রমিকদের বকেয়া বেতন না দিয়ে পালানোর সময় কারখানার পরিচালক গ্রেপ্তার
সাভারে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের তিন মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করে পালিয়ে যাওয়ার সময় কারখানাটির পরিচালককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মিরপুরের পল্লবী এলাকা থেকে গতকাল শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আটক পোশাক কারখানার ওই পরিচালকের নাম মরিয়ম বেগম (৩৭)। তিনি কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার বাসিন্দা। তিনি সাভারের বিরুলিয়ার গোলাপ গ্রামের ওমর ফ্যাশন লিমিটেডে পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন।
পুলিশ বলছে, বিরুলিয়ার গোলাম গ্রামে ওমর ফ্যাশন লিমিটেডে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছিলেন ৬৯ জন শ্রমিক। এর মধ্যে ওই শ্রমিকদের আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের বেতন বকেয়া থাকায় তা পরিশোধ করার কথা ছিল নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। কিন্তু মালিকপক্ষ বিভিন্নভাবে টালবাহনা করে এবং শ্রমিকদের তিন মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করে ভয়ভীতি দেখিয়ে কৌশলে কারখানায় তালা ঝুলিয়ে গা ঢাকা দেয়।
পরে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে শফিকুল ইসলাম নামের এক শ্রমিক সবাইকে নিয়ে গত ১০ নভেম্বর সাভার মডেল থানায় উপস্থিত হন। সেখানে তিনি কারখানাটির চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক মোবারককে প্রধান আসামি এবং ভবন মালিক মোহাম্মদ বিল্লালকে ২ ও পরিচালক মরিয়ম বেগমকে ৩ নম্বর আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর আসামিদের গ্রেপ্তারে মাঠে নামলেও তাঁরা ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করায় তাঁদের ধরতে পারেনি পুলিশ। পরে গতকাল রাতে কারখানার পরিচালক মরিয়ম বেগম মিরপুরের পল্লবী এলাকার ভাড়া বাসা থেকে আসবাবপত্রসহ পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার হন।
বর্তমানে মরিয়ম বেগম সাভার মডেল থানায় রয়েছেন। আজ রোববার দুপুরে তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে তিন মাসের বকেয়া বেতন না পাওয়ায় ওই কারখানার শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। রাত থেকেই ওই পরিচালকের শাস্তির দাবি ও বকেয়া বেতনের জন্য সাভার মডেল থানায় জড়ো হন অনেক শ্রমিক।
শ্রমিকদের দাবি, ওই কারখানার ৬৯ জন শ্রমিক ও কর্মচারীর তিন মাসের বকেয়া বেতন বাকি রয়েছে ২১ লাখ টাকা। কিন্তু কারখানার মালিকপক্ষ প্রস্তুত করা শিপমেন্টের কাপড় রপ্তানি শেষে বায়ারদের কাছ থেকে ২১ লাখ টাকা উত্তোলনের পর শ্রমিকদের পরিশোধ না করে নিজেরাই ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছেন। এতে করে শ্রমিকরা নিজের পরিশ্রমের টাকা না পেয়ে তিন মাস ধরে কষ্টে জীবন-যাপন করছেন।
এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মামলার অন্য দুই আসামিকেও গ্রেপ্তার করতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে।’