শ্রদ্ধা নিবেদনে প্রস্তুত স্মৃতির মিনার
খানিক বাদেই ফুলে ফুলে ভরে উঠতে শুরু করবে স্মৃতির মিনার। একুশের প্রথম প্রহরেই সারা জাতি মাথা নত করে ভাষা-শহীদদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানাবে। তার জন্য এরই মধ্যে বর্ণিল আলপনা আর আলোর মায়ায় শোভিত হয়েছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে নিরাপত্তার বিবেচনায় ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে পুরো শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে দেখা যায়, ব্যারিকেডের ভেতরে কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এ ছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে পুরো এলাকায় বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
সকালে পরিচ্ছন্নকর্মীদের ধোয়া-মোছার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের আলপনা আঁকতে দেখা গেছে। দেওয়াল লিখন, বেদি ও সড়কে আলপনা আঁকতে ব্যস্ত সময় পার করছিলেন তাঁরা। রাস্তার পাশের দেওয়ালে দেওয়ালে শোভা পেয়েছে ভাষা আন্দোলনের নানা গান, কবিতা ও স্লোগান। বিকেল ৫টার ভেতরে শহীদ মিনার এলাকার সব কাজ সম্পন্ন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
আলপনার পুরো কাজের তদারকি করেছেন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীরা। এদের একজন কুমার বিশ্বজিৎ অপু। তিনি ২০০৪ সাল থেকে প্রতি বছরই এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শহীদ মিনারকে কেন্দ্র করে মোট ২৩টি দেওয়াল, নয়টি বেদি ও আটটি সড়কে আঁকাআঁকির কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। চারুকলা বিভাগের মোট ৪০০ জন শিক্ষার্থী এই কাজ সম্পন্ন করেছে।’
সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও পুলিশের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণকক্ষ। এমনকি সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও দেখা গেছে সেখানে। এ ছাড়া সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দেখা গেছে।
প্রস্তুতির ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালেয়র প্রক্টর গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩টি কমিটি এখানে কাজ করছে। একুশে ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে শহীদ মিনারকে। এখন আমরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর অপেক্ষায় আছি। আশা করছি, আগামী দিনটি প্রত্যাশিতভাবে সম্পন্ন করব।’
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নিরাপত্তা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন র্যাব মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ। তিনি বলেন, ‘পুরো শহীদ মিনার এলাকায় আমরা পাঁচটি সেক্টরে ভাগ করেছি। এই সেক্টরগুলোতে আমরা তিন ধাপে নিরাপত্তা দেব। তিনটি ধাপের প্রথমটি হচ্ছে, শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর পূর্ববর্তী সময়। অর্থাৎ এটি এখন চলছে। দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে সন্ধ্যা থেকে যা চলবে আগামীকাল দুপুর পর্যন্ত। এর পরও তৃতীয় ধাপে আমাদের নিরাপত্তা বলবৎ থাকবে।’