শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা : ১০ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ১০ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া এ মামলায় দণ্ড থেকে এক ব্যক্তিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণ) এবং আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রায় ঘোষণা করেন। বেলা পৌনে ১১টা থেকে দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত এ রায় পড়েন হাইকোর্ট। ভাষার মাসের প্রতি সম্মান জানিয়ে বাংলায় এ মামলার রায় দেন আদালত।
মামলার রায়ে যাদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে তাঁরা হলেন- ওয়াশিম আখতার ওরফে তারেক হোসেন, মো. রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, মো. ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. নাসির উদ্দিন ও মোহাম্মদ আহসান। অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন শুনানিতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১০ জনের সাজা বহাল রাখার আর্জি জানান।
২০১৭ সালের ২০ আগস্ট গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মমতাজ বেগম উপরিউক্ত ১০ জনের সর্বোচ্চ শাস্তি দেন। আদালত গুলি করে প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন। এ ছাড়া চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন।
এর মধ্যে আসামি মেহেদি হাসান ওরফে আবদুল ওয়াদুদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। আসামি আনিসুল ওরফে আনিস, মো. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান এবং সরোয়ার হোসেন মিয়াকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অনাদায়ে আরো এক বছরের দণ্ড দেওয়া হয়।
পরে এ মামলার রায়সহ সব নথি ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট হাইকোর্টে পাঠানো হয়। আজকের রায়ে হাইকোর্ট শুধু ১৪ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সরোয়ার হোসেন মিয়াকে দণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন। নিম্ন আদালতে দণ্ড পাওয়া বাকি সবার সাজা ও অর্থ জরিমানা বহাল রাখা হয়েছে।
২০০০ সালের ২০ জুলাই কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যালয়ের উত্তর পাশের একটি চায়ের দোকানের পেছনে এ বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় তৎকালীন কোটালীপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নূর হোসেন একটি মামলা দায়ের করেন।