বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শুধু বিএনপির জন্য নয়, ১৮ কোটি মানুষের জন্য খালেদা জিয়াকে দরকার।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ রোববার বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। স্বেচ্ছাসেবক দল এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।

এ ছাড়া আইনমন্ত্রীর উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন ‘মিথ্যা কথা বলে আপনি আইনের প্রতি জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একমাত্র সরকারই দেশনেত্রীকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে পারে। বহু নজির আছে—আওয়ামী লীগের নেতা নাসিম সাহেবকে জেল থেকেই চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছিল। আইনের ৪০১ ধারায় পরিষ্কার করে বলা আছে, শুধু সরকার চাইলে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে পারে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশে যদি সত্যিকার অর্থে শান্তি চান, স্থিতিশীলতা চান, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে চান। তাহলে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে দরকার হবে। অন্যথায় কেউ এখানে শান্তি-স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পারবে না।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘শুধু বিএনপির জন্য খালেদা জিয়াকে দরকার নয়। খালেদা জিয়াকে দরকার ১৮ কোটি মানুষের জন্য। তিনি একমাত্র নেত্রী যিনি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের অতন্দ্রপ্রহরী। তিনি আমাদের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে দিতে পারেন। আমাদের অধিকারগুলো ফিরিয়ে দিতে পারেন। সেজন্য আমরা খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর দাবি করছি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এ দাবি জানাচ্ছি। আমরা বারবার বলছি তাঁকে বিদেশে পাঠান চিকিৎসার জন্যে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘শুধু স্বেচ্ছাসেবক দল নয়, যুবদল নয়, ছাত্রদল নয়, অঙ্গ সংগঠন নয়, বিএনপি নয়, সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ আজ কারাগারে বাস করছে। শান্তি নেই, স্বস্তি নেই,‌ মানুষ হাসিমুখে কথা বলতে পারে না। নিরাপদে রাস্তায় বের হতে পারে না। তাদের জীবন-জীবিকা চালাতে পারে না। ভয়াল একটি অবস্থার মধ্যে বাংলাদেশের মানুষ বাস করছে। খালেদা জিয়া অসুস্থ,‌ অত্যন্ত অসুস্থ। প্রতিদিন চিকিৎসকেরা তাঁর জীবন রক্ষার জন্য সংগ্রাম করছেন।’

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না কেন? তার একটি কারণ—খালেদা জিয়া একমাত্র নেত্রী তিনি জন্ম থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজ করছেন। মানুষের জন্য কথা বলছেন। তিনি যখন বিরোধীদলীয় নেত্রী ছিলেন তখন নয় বছর গণতন্ত্রের জন্য পথে পথে ঘুরে বেরিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন এ দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করেছেন।’

শিক্ষার্থীদের বাস ভাড়া অর্ধেক করার দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ছেলেমেয়েরা স্কুল-কলেজে পড়ে। বাস ভাড়া কমানোর জন্য রাস্তায় নেমেছে। এখন লেখাপড়া করতে খরচ অনেক বেড়ে গেছে, এজন্য তারা বাস ভাড়া হাফ করতে বলছে। নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবা-মায়েরা সন্তানের লেখাপড়া করাতে হিমশিম খাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার জন্য, এই ছেলে-মেয়েদের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য এ সমাবেশ থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের দাবির প্রতি সম্পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। বাস ভাড়া কমিয়ে হাফ পাস করা হোক। প্রয়োজনে সরকার ভর্তুকি দেবে।’

স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাঁদির ভুঁইয়া জুয়েলের সঞ্চলনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, কৃষকদল সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেত্রী বিথিকা বিনতে প্রমুখ।