শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সহযোগী শাকিল আটক
শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সহযোগী মাজহারুল ইসলাম শাকিলকে (৩৫) আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শনিবার ভোরে শাকিলকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে আটক করা হয়েছে।
আজ শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের গোয়েন্দা ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক সারওয়ার বিন কাশেম।
সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, ‘শুক্রবার ভোর রাত পাঁচটার দিকে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে শাকিলকে আটক করা হয়। শাকিল একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যাচ্ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এর আগে থেকে আমরা ওই এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদেরকে তল্লাশি করছিলাম। তল্লাশির এক পর্যায়ে সিএনজির ভেতর থেকে তাকে আটক করা হয়। সে সময় তার কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগজিন ও ছয় রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।’
সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, ‘শাকিল চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি দেশে আসেন। মূলত তার দেশে আসার উদ্দেশ্য হলো, শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের নির্দেশ ও সহযোগিতায় বাংলাদেশে তার সন্ত্রাসী কার্যক্রম নতুন করে প্রতিষ্ঠিত করে আন্ডারওয়ার্ল্ডের নেতৃত্ব দেওয়া। এই উদ্দেশে সন্ত্রাসী মাজহারুল ইসলাম শাকিল প্রথমে রাজধানীর একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তির উদ্দেশ্য ছিল হাসপাতালের কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা সৃষ্টি করে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া।’
গোয়েন্দা শাখার পরিচালক বলেন, ‘আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাকিল আমাদেরকে জানিয়েছেন সে দীর্ঘদিন সন্ত্রাসী জিসানের পক্ষে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি করে আসছে। দুবাইতে বসেও শাকিল বাংলাদেশে বিভিন্ন লোককে হুমকি দিয়ে ম্যাসেজ দিতেন।’
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘২০০৫ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ছাত্র রাজনীতি শুরু করে শাকিল। পরবর্তীতে সে ঢাকা মহানগর ও ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। এরপর ২০০৯ সাল থেকে যৌথভাবে টেন্ডার বাণিজ্য শুরু করে। তখন রেলওয়েতে ছোট ছোট টেন্ডার নিয়ে কাজ করত। এভাবে ২০১০ থেকে ১২ সাল পর্যন্ত বই টেন্ডার নিয়ে কাজ করত। এরপর ২০১৩ সালে সে গ্রামের বাড়ি ফেনীতে গিয়ে পারিবারিক ব্যবসা ও স্থানীয় রাজনীতিতে জড়ায়। ২০১৫ সালে পুনরায় ঢাকা আসলে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে।’
সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, ‘২০১৬ সালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুবলীগের সহ-সম্পাদক রাজিব হত্যা মামলার এজাহারে তার নাম এলে শাকিল চীনে চলে যায়। সেখানে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বসবাস এবং কার্গো সার্ভিসের কাজ করে। এরপর ২০১৮ সালে চীন থেকে দুবাই চলে যায় এবং ২০২০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সেখানেই ছিল। দুবাইতে থাকা অবস্থায় তার এক বন্ধুর মাধ্যমে সন্ত্রাসী জিসানের সাথে শাকিলের পরিচয় হয়। সেখানে তারা একসাথে থেকে সন্ত্রাসী পরিকল্পনা এবং তাদের বিভিন্ন সহযোগীর মাধ্যমে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করত।’
শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান এখন কোথায় আছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, ‘শাকিলকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জিসানের ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে। তাকে নিয়ে এখন খানিকটা ধোঁয়াশা আছে। তবে জিসানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের চেস্টা অব্যাহত আছে।’