শীর্ষসন্ত্রাসী জিসানের সহযোগী শাকিল রিমান্ডে
শীর্ষসন্ত্রাসী জিসানের সহযোগী মাজহারুল ইসলাম শাকিলকে (৩৫) রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার অস্ত্র আইনের মামলায় তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্র্রেট শাহিনূর রহমান এ আদেশ দেন।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আজ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোর্শেদ আলম আসামি শাকিলকে হাজির করে সাত দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামিনের আবেদন নাকচ করে তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ।
এদিকে গতকাল শনিবার ভোরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে শাকিলকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
পরে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারের পরিচালক সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, ‘শুক্রবার ভোর রাত ৫টার দিকে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে শাকিলকে আটক করা হয়। শাকিল একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে যাচ্ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আগে থেকে আমরা ওই এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদেরকে তল্লাশি করছিলাম। তল্লাশির একপর্যায়ে সিএনজির ভেতর থেকে তাকে আটক করা হয়। সে সময় তার কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও ছয়টি গুলি উদ্ধার করা হয়।’
সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, ‘শাকিল চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি দেশে আসেন। মূলত তার দেশে আসার উদ্দেশ্য হলো, শীর্ষসন্ত্রাসী জিসানের নির্দেশ ও সহযোগিতায় বাংলাদেশে তার সন্ত্রাসী কার্যক্রম নতুন করে প্রতিষ্ঠিত করে আন্ডারওয়ার্ল্ডের নেতৃত্ব দেওয়া। এই উদ্দেশে সন্ত্রাসী মাজহারুল ইসলাম শাকিল প্রথমে রাজধানীর একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তির উদ্দেশ্য ছিল হাসপাতালের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সৃষ্টি করে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া।’
গোয়েন্দা শাখার পরিচালক বলেন, ‘আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাকিল আমাদের জানিয়েছেন, তিনি দীর্ঘদিন সন্ত্রাসী জিসানের পক্ষে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি করে আসছেন। দুবাইতে বসেও শাকিল বাংলাদেশে বিভিন্ন লোককে হুমকি দিয়ে ম্যাসেজ দিতেন।’
র্যাব আরো জানায়, ২০০৫ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন শাকিল। এরপর ২০০৯ সাল থেকে যৌথভাবে টেন্ডার বাণিজ্য শুরু করে। তখন রেলওয়েতে ছোট ছোট টেন্ডার নিয়ে কাজ করতেন। ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বই ছাপানোর টেন্ডার নিয়ে কাজ করেন। এরপর ২০১৩ সালে তিনি গ্রামের বাড়ি ফেনীতে গিয়ে পারিবারিক ব্যবসা ও স্থানীয় রাজনীতিতে জড়ান। ২০১৫ সালে পুনরায় ঢাকায় এসে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন।’
২০১৬ সালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুবলীগের সহসম্পাদক রাজিব হত্যা মামলার এজাহারে নাম এলে শাকিল চীনে চলে যান। সেখানে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বসবাস এবং কার্গো সার্ভিসের কাজ করেন। এরপর ২০১৮ সালে চীন থেকে দুবাই চলে যান এবং ২০২০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সেখানেই ছিল। দুবাইতে থাকা অবস্থায় এক বন্ধুর মাধ্যমে সন্ত্রাসী জিসানের সঙ্গে শাকিলের পরিচয় হয়।
গতকাল রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় শাকিলের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করেন র্যাব ২-এর পরিদর্শক আব্দুল হামিদ খান।