শিশু সায়মাকে ধর্ষণের পর হত্যা, ‘নির্দোষ’ দাবি হারুনের
রাজধানীর ওয়ারীতে সিলভারডেল স্কুলের নার্সারির ছাত্রী সামিয়া আফরিন সায়মাকে (৭) ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে করা মামলায় আসামি হারুন আর রশিদ আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজেকে ‘নির্দোষ’ দাবি করেছেন।
আজ রোববার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ১ নম্বর আদালতের বিচারক কাজী আবদুল হান্নানের আদালতে হারুন আত্মপক্ষ সমর্থনে এ কথা বলেন। শিশু সায়মাকে ধর্ষণের পরে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তারের পরে আসামি হারুন আদালতে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছিলেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী তৈয়ব আলী এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ এ মামলার আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য দিন ধার্য ছিল। আত্মপক্ষ সমর্থনের সময় আসামি হারুনকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি বিচারকের কাছে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন। এর পরে বিচারক আগামী ৫ মার্চ যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেন।
এদিকে আদালতে বিচারকের উদ্দেশে আসামি হারুন বলেন, ‘সাক্ষীরা যে সাক্ষ্য দিয়েছে, তা মিথ্যা। আমাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা হয়েছে।’
এর আগে ২ জানুয়ারি একই আদালত সায়মাকে ধর্ষণ ও হত্যার করার অভিযোগে আসামি হারুন আর রশিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।
গত বছরের ৫ নভেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মো. আরজুন আসামি হারুনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, আসামি হারুন আর রশিদকে গত বছরের ৭ জুলাই তাঁর বাড়ি কুমিল্লার তিতাস উপজেলার ডাবরডাঙ্গা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়্দো (ডিবি) পুলিশ। পরের দিন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরাফুজ্জামান আনসারীর আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে।
এজাহার থেকে জানা যায়, গত বছরের ৫ জুলাই সন্ধ্যার পর থেকে শিশু সায়মার খোঁজ পাচ্ছিল না তার পরিবার। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নবনির্মিত একটি ভবনের নবম তলার খালি ফ্ল্যাটের ভেতর সায়মাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায় পরিবারের সদস্যরা। খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ জানান, শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। তারা শিশুটির শরীরে ধর্ষণের আলামত পেয়েছেন।
ঘটনার পরের দিন সায়মার বাবা আবদুস সালাম বাদী হয়ে ওয়ারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন।