শিশু ধর্ষণ মামলার আসামিকে ধরে বাদীকে খবর দিতে বলেছেন এসআই!
ময়মনসিংহে নয় বছর বয়সী এক শিশু মেয়েকে ধর্ষণ মামলার দুই মাস পরও আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি কোতোয়ালি থানা পুলিশ। মামলার বাদীর অভিযোগ, আসামি প্রকাশ্যে ঘুরছে। তার স্বজনরা মামলা প্রত্যাহারে চাপ দিচ্ছে এবং হত্যা-অপহরণ-গুম ও মিথ্যা মামলা দিয়ে শায়েস্তা করার হুমকি দিচ্ছে।
বিষয়টি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সোহেল রানাকে জানালে তিনি আসামি গ্রেপ্তারে কার্যকর পদক্ষেপ নেননি; বরং বাদীকেই আসামি আটক করে তাঁকে খবর দিতে বলেন।
এ বিষয়টি উল্লেখ করে গত ৪ অক্টোবর ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি) আহমার উজ্জামানের কাছে আবেদন করে আসামিকে গ্রেপ্তার ও হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিশুটির মা।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সুপারের কাছে দেওয়া আবেদন সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ আগস্ট দুপুরে বাদীর নয় বছর বয়সী মেয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করতে যায়। এ সময় সদর উপজেলার উজান ঘাগড়া এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে নাহিদ (১৮) শিশুটিকে পুকুর থেকে উঠিয়ে এনে ধর্ষণ করেন। পরে শিশু কান্নাকাটি করতে থাকে। এ সময় শিশুর চাচা কান্নার কারণ জানতে চাইলে তাকে ধর্ষণ করার কথা জানায়।
এ ঘটনায় ৮ আগস্ট শিশুটির মা বাদী হয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় নাহিদকে আসামি করে একটি মামলা করেন। কিন্তু দীর্ঘ দুই মাস অতিক্রান্ত হলেও আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় বাদী গত ৪ অক্টোবর পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামানের কাছে তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আসামি গ্রেপ্তার না করার নালিশ করেন।
বাদী বলেন, মামলার আসামি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সোহেল রানা আসামি গ্রেপ্তার না করে বাদীকেই আসামি আটক করে তাঁকে খবর দিতে বলেছেন। আসামি নাহিদ, তাঁর বাবা হাবিবুর রহমান, দুই ভাই উজ্জ্বল ও ফয়সাল এবং তাদের বোনজামাই রাসেল মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে চাপ দিচ্ছেন। খুন-অপহরণ-গুম করার হুমকি দিয়ে, এমনকি মিথ্যা মামলা দিয়ে শায়েস্তা করার হুমকি দিচ্ছে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার বলেন, ঘটনার পর মামলা দায়ের করতে বিলম্ব করা হয়েছে। আসামি মোবাইল ফোন ব্যবহার করে না। যে কারণে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করতে না পারায় আসামি গ্রেপ্তারে কিছু বিলম্ব হচ্ছে। তবে শিগগিরই আসামিকে গ্রেপ্তার করা যাবে বলে তিনি আশাবাদী।