শহীদজায়া বেগম মুশতারী শফী আর নেই
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখা শহীদজায়া বেগম মুশতারী শফী মারা গেছেন। রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে গতকাল সোমবার বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তিনি দুই ছেলে, চার মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
এদিকে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেগম মুশতারী শফীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের আয়োজন করছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
বেগম মুশতারী শফীর পরিবার একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সাহসী ভূমিকা পালন করেছিল। তাঁর স্বামী ডা. শফী মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র-গোলাবারুদ নিজের হেফাজতে রেখেছিলেন। এ কারণে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর সদস্যেরা তাঁকে এবং মুশতারী শফীর ভাইকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। স্বামী ও ভাই হারিয়েও মুশতারী শফী মনোবল অক্ষুণ্ণ রেখে চট্টগ্রামে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে যান। স্বাধীন দেশে প্রগতিশীল সংস্কৃতির সংগ্রাম, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন, নারীমুক্তির আন্দোলন, নাগরিক আন্দোলনসহ সব ক্ষেত্রে রাজপথে সোচ্চার থেকেছেন।
এদিকে, বেগম মুশতারী শফীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল এক শোক বার্তায় রাষ্ট্রপ্রধান প্রয়াতের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এ ছাড়া গতকাল অপর এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক ও নাগরিক আন্দোলনে মুশতারী শফীর অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এ ছাড়া শহীদজায়া বেগম মুশতারী শফীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) চট্টগ্রাম জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল নবী ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অশোক সাহা।
শোকবার্তায় সিপিবি নেতারা বলেন, বেগম মুশতারী শফীর পরিবার একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অসম সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন। বেগম মুশতারী শফীর মৃত্যুতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের প্রগতিশীল রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বেগম মুশতারী শফীর অবদান অবশ্যই স্মরণে রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।