রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে চাপ দেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ফিরিয়ে নিতে সেদেশের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য ডি-৮ সদস্য রাষ্ট্রের সরকারপ্রধানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের পরিবেশ, সমাজ এবং অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানবিক বিবেচনাবোধ থেকে বাংলাদেশ এক দশমিক এক মিলিয়ন মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছে। শুরু থেকে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিরাপদ, সম্মানজনক এবং টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য চেষ্টা করে আসছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তিন বছরের বেশি সময় পার হলেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন এখনও শুরু হয়নি।’
এ সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সবাইকে সর্তক করে দিয়ে বলেন, ‘এই সংকটের সমাধান না হলে এটি আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।’
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে গণভবন থেকে দশম ‘ডি-৮’ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্বকালে এই আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর কাছে সংস্থাটির সভাপতির দায়িত্ব হস্তান্তর করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।
বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করার অনন্য সময়ে এ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন ও এর সভাপতিত্ব করেছে। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এই শীর্ষ সম্মেলনের শুরুতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট উদ্বোধনী ভাষণ দেন এবং এরপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে সভাপতিত্বের দায়িত্ব তুলে দেন।
এ ছাড়া সম্মেলনে পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়শিয়া, ইরান, মিশর ও নাইজেরিয়ার নেতারা অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো, যুব উন্নয়ন, তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার এবং কানেকটিভিটি বাড়াতে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করার চার দফা প্রস্তাব দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ব্যবসায়িক ধারণা, মডেল, উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিতে তরুণদের শক্তি এবং সম্ভাবনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বেসরকারি, এমনকি সরকারি থেকে বেসরকারি পর্যায়েও ব্যবসা উদ্যোগের মাধ্যমে আমাদের দেশগুলোর (ডি-৮) যুবকদের একত্রিত হতে উৎসাহিত করা যেতে পারে। ডি-৮ বিজনেস ফোরামের সঙ্গে প্রথম ডি-৮ ইয়ুথ সম্মেলনটি একটি বিরল সুযোগ তৈরি করেছে।’
১৯৯৭ সালে ডি-৮ প্রতিষ্ঠার সময় শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইস্তাম্বুলে প্রথম শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৯৯ সালে ঢাকায় দ্বিতীয় ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার সময়ও শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেছিলেন।
উন্নয়নশীল-৮ নামে পরিচিত ডি-৮ অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য আটটি উন্নয়নশীল মুসলিম-প্রধান দেশ বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্কের সমন্বয়ে গঠিত হয়। ডি-৮-এর সব রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ডি-৮ মহাসচিব প্রতিনিধিরা ভার্চুয়ালি এই সম্মেলনে যোগ দেন।