রিমান্ড শেষে ‘দর্জি’ মনির কারাগারে
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও চাঁদাবাজির মামলায় ‘বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদ’ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মনির খান ওরফে ‘দর্জি’ মনিরকে চার দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহ এই আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের পরিদর্শক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আজ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামি মনির খান ওরফে ‘দর্জি’ মনিরকে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। অপরদিকে তাঁর আইনজীবী আমানুল করিম লিটন জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত ৪ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালত ‘দর্জি’ মনিরের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে দর্জি মনিরের বিরুদ্ধে গত ৩ আগস্ট কামরাঙ্গীরচর থানায় মামলা করেন ইসমাইল হোসেন নামের এক ব্যক্তি।
এজাহারে বাদী ইসমাইল হোসেন বলেন, আসামি মনিরকে আমি ১৫ বছর ধরে চিনি। তিনি একটি ছোট দর্জির দোকানে চাকরি করতেন। হঠাৎ তিনি নিজেকে রাজনৈতিক বড় নেতা পরিচয় দেওয়া শুরু করেন। তিনি একেক সময় একেক রাজনৈতিক পরিচয়সহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে পরিচয় দিতেন। এ ছাড়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক ছাড়াও আরও অনেক মন্ত্রী-এমপির সঙ্গে নিজের ছবি কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে এডিট করে বসিয়ে নিজেকে ‘বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদ’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি দাবি করতেন।
বাদী অভিযোগ করেন, এসব পদ ব্যবহার করে ঢাকা মহানগরী এবং বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় কমিটি দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা দাবি করতেন মনির। গত ৩০ জুলাই কামরাঙ্গীরচর থানা এলাকার মাদবর বাজার এলাকার ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের এক জানাজায় বাদীকে তাঁর সংগঠনের পদ এবং বিভিন্ন বড় বড় নেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক করিয়ে দেওয়ার নাম করে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তিনি।
ইসমাইল হোসেন এজাহারে দাবি করেন, আসামি ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে ডিজিটাল জালিয়াতির মাধ্যমে ছবি এডিট করতেন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে নিজের ছবি বসিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য প্রচার করে সাধারণ মানুষকে ঠকানোর উদ্দেশে বিশ্বাস স্থাপন করতেন। এ ছাড়া আসামি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করে নিজেকে ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে প্রচার করে এলাকায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সৃষ্টি করেন। যার ফলে সাধারণ জনগণের মধ্যে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়।