রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক শিগগিরই গ্রেপ্তার হবে, আশা র্যাবের
নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে দুর্নীতি করার অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো. সাহেদকে গ্রেপ্তার করতে একাধিক অভিযান চালাচ্ছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তবে এখন পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হলেও শিগগিরই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন-কাশেম।
আজ বুধবার দুপুরে র্যাব সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাবের গোয়েন্দা প্রধান। তিনি বলেন, ‘আমরা তাকে গ্রেপ্তার করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। তবে আশা করছি, জনগণের সঙ্গে সে প্রতারণা করেছে। জনগণই তাকে র্যাবের হাতে তুলে দেবে।’
সংবাদ সম্মেলনে সারওয়ার-বিন-কাশেম বলেন, গতকাল রিজেন্ট হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার নামে প্রতারণাসহ নানা অভিযোগে সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করা হয়েছে। পলাতক সাহেদকে ধরতে এরই মধ্যে র্যাবের একাধিক টিম মাঠে নেমেছে। সাহেদ যাতে কোনো অবস্থায় দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে সেজন্য নেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।
জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম তার সাহেদ করিম। পরিচয় দিতেন মো. সাহেদ নামে। বিভিন্ন সময় নানা ধরনের অপকর্ম করে থানা পুলিশ এবং জেলও খেটেছেন তিনি। এভাবেই টাকার পাহাড়ও গড়েছেন।
সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মানুষের সঙ্গে ছবি তুলে তার অপকর্মকে ঢাকার চেষ্টা করতেন এবং আরো অপকর্ম করার সুযোগ খুঁজতেন মো. সাহেদ।
সাহেদ নিজেকে সেনাকর্মকর্তাও পরিচয় দিতেন। কখনো মেজর, লেফটেন্যান্ট কর্নেল, কর্নেল এমনকি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নামও ব্যবহার করতেন।
র্যাবের এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালে সাড়ে প্রায় চার হাজার করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট দিয়েছে। একজন কম্পিউটার অপারেটর বসে বসে সাড়ে চার হাজার রিপোর্ট তৈরি করেছেন। মনগড়া রিপোর্ট পজিটিভ-নেগেটিভ দিয়েছেন। তাছাড়া মোট ১০ হাজার রোগীর করোনা টেস্টের নমুনা সংগ্রহ করে রিজেন্ট হাসপাতাল। মাত্র চার হাজার ২৬৪টি নমুনা সরকারিভাবে টেস্ট করে রিপোর্ট দেয়। এ ক্ষেত্রে ভয়াবহ প্রতারণার কৌশল গ্রহণ করে রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কারও জ্বর থাকলে তাকে পজিটিভ আর জ্বর না থাকলে নেগেটিভ রিপোর্ট প্রদান করে।
অভিযানের পর সব জানাজানি হলে রিজেন্ট থেকে পরীক্ষা করানো অনেকেই র্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, তাদের রিপোর্ট ঠিক নাকি ভুল সেটি জানার জন্য। এ ছাড়া হাসপাতালটির অপারেশন থিয়েটারের ভেতর চলতো রান্নাবান্নার কাজ। ফ্রিজ ভর্তি ছিল মাছ।
সারওয়ার বিন কাশেম আরো বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ ছিলো রিজেন্ট হাসপাতাল প্রথমে দ্রুত নমুনা নিয়ে যায় কিন্তু সঠিক রেজাল্ট তারা দেয় না। এক্ষেত্রে আমরা দেখতে পেয়েছি তারা সাড়ে চার হাজার নমুনা নিয়ে তারা নিজেদের মনগড়া রিপোর্ট দিয়েছে, কখনো পজিটিভ, কখনো নেগেটিভ।
