রায়হান হত্যা : এসআই আকবর সাত দিনের রিমান্ডে
সিলেটের বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিহত রায়হান উদ্দিন আহমদ (৩২) হত্যার মামলায় বরখাস্তকৃত উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক আওলাদ হোসেন বলেন, আজ মঙ্গলবার দুপুরে এসআই আকবরকে সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আকবরকে আদালতে নেওয়া হলে শত শত মানুষ ‘ফাঁসি চাই’, ‘ফাঁসি চাই’ বলে স্লোগান দেয়। এ সময় আদালত চত্বরের নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
গতকাল সোমবার দুপুরে সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর রাত ৮টার দিকে জেলা পুলিশ আকবরকে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করে। রাতেই আকবরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর আগে গত ১১ অক্টোবর বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে যুবক রায়হান আহমদের মৃত্যু হয়। এর দুদিন পরই আকবর পালিয়ে যান।
সিলেট নগরীর আখালিয়া এলাকার নেহারীপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে রায়হান উদ্দিন আহমদকে (৩৩) গত ১০ অক্টোবর রাতে বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করে হত্যা করা হয় বলে পুলিশের তদন্তেই বেরিয়ে এসেছে। পরের দিন ১১ অক্টোবর সকালে তাঁর লাশ পায় পরিবার। পরে ওই দিন রাতে নিহত রায়হানের স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। স্বজনদের অভিযোগ, ১০ হাজার টাকা না পেয়ে রায়হানকে পুলিশ হেফাজতে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর ১২ অক্টোবর বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত কর্মকর্তা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া, এসআই টিটু চন্দ্র দাস, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ ও তৌহিদ মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া প্রত্যাহার করা হয় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেনকে। পরে ২১ অক্টোবর মামলার আলামত নষ্টের অভিযোগে এসআই হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
গত ১২ অক্টোবর পর্যন্ত আকবর পুলিশের নজরদারিতে ছিলেন। এরপর থেকে তাঁর কোনো খোঁজ পায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তিনি যাতে পালিয়ে ভারতে চলে যেতে না পারেন- এজন্য সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী সব থানা এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয় বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন সিলেট জেলার পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন।
এদিকে আকবরের দাবি, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরামর্শ পাওয়ার পর সিলেটের ভোলাগঞ্জ সীমান্ত ও মেঘালয়ের মাঝেরগাঁও এলাকা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান তিনি। প্রথমে শিলং হয়ে আসামের শিলচরে অবস্থান করেন। সোমবার দুপুরে কানাইঘাট উপজেলার ডোনা সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে আসার পথে সীমান্ত এলাকায় লকডাউন থাকায় ভারতের খাসিয়ারা আটক করে। এরপর তারা তাঁকে বাংলাদেশের খাসিয়াদের কাছে হস্তান্তর করে।