যেভাবে সুস্থ হলেন রাজশাহীর করোনা আক্রান্ত প্রকৌশলী
হোম কোয়ারেন্টিন মেনে এবং নিয়মিত গরম পানির গড়গড়া করে সুস্থ হয়েছেন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী। গতকাল মঙ্গলবার তৃতীয় দফার নমুনা পরীক্ষায় তাঁর শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তাঁর পরিবারের অন্য চার সদস্যের শরীরেও করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মেলেনি।
গত ৬ এপ্রিল উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের যাত্রাগাছি এলাকার তরুণ এই বস্ত্র প্রকৌশলী নারায়ণগঞ্জ থেকে মাছের ট্রাকে বাড়ি ফিরে আসেন। এর পর থেকে জ্বর, সর্দি ও কাশিতে ভুগতে থাকেন তিনি। স্থানীয়ভাবে তাঁকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। গত ১১ এপ্রিল তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হলে নমুনা পরীক্ষা শেষে রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে নিজ বাড়ির আইসোলেশনে নিবিড় পরিচর্যায় থেকে তিনি সুস্থ হতে শুরু করেন। তরুণ এই প্রকৌশলী জানান, মনোবল শক্ত করে তিনি চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে হোম কোয়ারেন্টিন পুরোপুরি মেনে চলেছেন। আর নিয়মিত গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করেছেন।
প্রকৌশলী বলেন, ‘নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ আসার পর আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়িনি। মন শক্ত করেছি। নিজেকে বুঝিয়েছি, আমাকে সুস্থ হতেই হবে। পরিবারের অন্য সদস্যদেরও আমি সাহস জুগিয়েছি।’
তরুণ এই প্রকৌশলী বলেন, ‘যে কেউ যেকোনো সময় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। আক্রান্ত হলে প্রথমেই নিজের মনোবল শক্ত করতে হবে। অন্যরা এ ভাইরাসকে জয় করেছে, আমি কেন পারব না? মনে এই দৃঢ়প্রত্যয় এনে হোম কোয়ারেন্টিন পুরোপুরি মেনে চলতে হবে। নিয়মিত গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করতে হবে। মনে অজানা আশঙ্কা একেবারেই আনা যাবে না। তাহলেই দেখা যাবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনিও জয় করে ফেলেছেন। আপনার শরীরেও করোনাভাইরাসের উপস্থিতি আর নেই।’
বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা ডা. গোলাম রাব্বানী জানান, ১৮ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় এবং ২৫ এপ্রিল তৃতীয় দফায় নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে মাড়িয়া ইউনিয়নের যাত্রাগাছি গ্রামের প্রকৌশলীর শরীরে আর করোনাভাইরাস নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরিফ আহম্মেদ বলেন, আক্রান্ত প্রকৌশলী এখন সুস্থ। উপজেলা প্রশাসন থেকে বরাবরই ওই প্রকৌশলীর খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। প্রকৌশলীর মন চাঙ্গা করতে তিনি নিজে দেশীয় খাবারের পাশাপাশি বৈশাখী খাবার ও বৈশাখী শুভেচ্ছাও জানিয়েছিলেন।
ইউএনও বলেন, ‘আক্রান্ত প্রকৌশলী সুস্থ হওয়ায় বাগমারা উপজেলা আপাতত করোনামুক্ত।’ তিনি উপজেলাবাসীকে অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের না হতে অনুরোধ জানিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।