ময়মনসিংহে প্রাইভেটকার উল্টে শ্যালকসহ এএসআই নিহত
ময়মনসিংহে প্রাইভেটকার উল্টে পুলিশের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমিনুল ইসলাম ও তাঁর শ্যালক জাহিদুল নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ত্রিশাল উপজেলার রায়মণি নামক স্থানে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন। তিনি জানিয়েছেন, আমিনুলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।
এএসআই আমিনুল ফুলবাড়ীয়া থানায় কর্মরত ছিলেন। ভাড়া বাসায় চুরির ঘটনায় গত ২৬ নভেম্বর এক কাভার্ডভ্যান চালককে বাসায় নিয়ে মারধর করেছিলেন তিনি। এ ঘটনায় শ্রমিকরা আমিনুলের বিচার দাবিতে আড়াই ঘণ্টাব্যাপী থানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে আমিনুলকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে নেওয়া হয়। এরপর তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার এক কর্মকর্তা জানান, এএসআই আমিনুল ইসলাম গতকাল দিবাগত রাতে নিজে প্রাইভেটকার চালিয়ে জেলার ভালুকা পৌর এলাকায় শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন। গাড়িতে ছিলেন তাঁর শ্যালক জাহিদুল। ঘন কুয়াশার কারণে রোড ডিভাইডারে ধাক্কা খেয়ে প্রাইভেটকারটি রাস্তার পাশে ডোবায় ছিটকে পড়ে যায়। এতে দুজনের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে ত্রিশাল থানা পুলিশ দুজনের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এএসআই আমিনুল ফুলবাড়ীয়ার কেআই ফাজিল মাদ্রাসা রোডে সেলিম মাস্টারের বাসায় ভাড়া থাকতেন। গত ২৫ নভেম্বর রাতের কোনো এক সময় তাঁর বাসায় চুরির ঘটনা ঘটে। এদিকে, পাশের প্রাণিসম্পদ অফিস রোডে সেই রাতের ভোর পর্যন্ত আবদুল কুদ্দুস ডিলারের গুদামে বিস্কুট নামানো হয় একটি কাভার্ডভ্যান থেকে। ভ্যানটি মালামাল নামিয়ে ত্রিশাল পর্যন্ত চলে যায়। চুরির ঘটনায় এএসআই আমিনুল ওই ভ্যানটিকে সন্দেহ করেন। পরদিন ত্রিশাল থানা পুলিশের সহযোগিতায় তিনি কাভার্ডভ্যানটি আটক করে ফুলবাড়ীয়া নিয়ে আসেন। পরে ভ্যানের চালক রফিকুল ইসলামকে (৪০) নিজের ভাড়া বাসায় নিয়ে বেধড়ক মারধর করেন এএসআই।
এ খবর শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে শত শত উত্তেজিত শ্রমিক ঐক্যবদ্ধ হয়ে সন্ধ্যার পর থানার ফটকের সামনে অবস্থান নেন এবং সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল আমিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের বক্তব্য শোনেন এবং অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল আমিন ২৭ নভেম্বর সকালে এনটিভিকে বলেন, ‘কাভার্ডভ্যান চালককে মারধরের কথা সঠিক। মারধরের শিকার চালককে শ্রমিক নেতৃবৃন্দের মুচলেকায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা তদন্ত করে সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্ট পুলিশের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেব।’
পরে আমিনুলকে ফুলবাড়ীয়া থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে নেওয়া হয়। এর পর ঘটনা তদন্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পেলে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।